পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఆఆ অধ্যাত্ম-রামায়ণ । রোম করত তাহার চরণদ্বয়ে নিপতিতা হইল মিথ্য সংসার আরোপ করিয়া ঐ অবস্থায় স্বয়ং কক্ষণ-পরিদেবিনী তারারঘুনন্দনকে অবলোকন করিয়া কহিল ;–“রাম! তুমি যে বাণ দ্বারা বালীকে নিহত করিয়াছ, সেই বাণ দ্বারা আমাকেও বিনষ্ট কর। আমি শীঘ্র পতি সন্নিধানে গমন করিব। পতি আমাকে কামনা করিতেছেন, হে রঘুনন্দন। আমা বিনা স্বর্গেও ষ্ঠহার মুখ নাই । হে অনঘ! পত্নী-বিয়োগ-জনিত দুঃখ তুমি স্বয়ং অনুভব করিতেছ—ণীঘ্র আমাকে বালীর নিকট প্রেরণ কর, তাহা হইলে তুমি পত্নীদান-জনিত ফল লাভ করিবে” । অনস্তর সুগ্রীবের প্রতি অবলোকন করিয়া কহিল ;–“হে সুগ্রীব । এক্ষণে তুমি বালি-ঘাতী রামচন্দ্রের প্রদত্ত নিষ্কণ্টক রাজ্য ও নিজ পত্নী রুমার সহিত পরম সুখ ভোগ কর” । মহামনা রামচন্দ্র এইরূপ বিলাপপরায়ণ তারাকে সদয়ভাবে তত্ত্বজ্ঞান উপদেশ দ্বারা সান্থনা করিতে লাগিলেন। ঐরাম কহিলেন ;– “হে ভীরু ! তুমি অশোচনীয় পতির নিমিত্ত বৃথা শোক করিতেছ কেন? যথার্থ বল দেখি, রণভূমিশয়িত দেহ কিংবা জীব উভয়ের মধ্যে কাহাকে পতি বলিয়া স্থির করিয়াছ ? যদি দেহকে পতি বল, তাহা হইলে শোকের বিষয় কিছুই নাই, যেহেতু, তাহা ত্বকু মাংস কুধির ও অস্থি দ্বারা পরিপূরিত। পঞ্চ-ভূতাত্মক, কাল অদৃষ্ট ও সত্ত্বাদি গুণযোগে উৎপন্ন জড়দেহ অদ্যাপি তোমার সম্মুখে বিদ্যমান রহিয়াছে। যদি জীবাস্মাকে পতি বলিয়া স্থির করিয়া থাক, তাহ হইলেও শোকের বিষয় কিছুই নাই, যেহেতু জীব নিরাময়— তাহার জন্ম মরণ, গতি বা স্থিতি কিছুই নাই । জীব, স্ত্রী নহেন, পুরুষ নহেন, ব, ক্লীল নহেন, তিনি সর্ব্বত্রগ, অব্যয় একমাত্র, অদ্বিতীয় এবং আকাশবৎ নিলে প; তিনি নিত্য; শুদ্ধ ; জ্ঞানময় ; তাহার নিমিত্ত শোক করিতেছ কেন” ? তারা কহিল ;– হে রাম। যদি এই দেহ কাঠের দ্যায় অচেতন এবং জীবাত্মা জ্ঞানময় নিত্যপদার্থ তবে রাম। মুখ দুঃখাদি ভোগ কাহার হয় ; বল । ঐীরাম কহিলেন ;–“যাবৎ অবিবেকবশতঃ দেহ ও ইক্রিয়াদির সহিত অহঙ্কার সম্বন্ধ থাকে, তাবৎ পর্য্যন্তই জীবাত্মার সুখ দুঃখাদি ভোগ হয়। হে মুঙ্গরি । মনুষ্যেরা বিষয়-ভাবনা করিতে করিতে নিদ্রিত হইয়া যেমন স্বত্বাবস্থায় ঐ চিত্তিত বিষয়ের মিথ্যা সমাগম লাভ করে এবং ঐ অবস্থায় ঐ অলীক বন্ধ হইতেও স্বয়ং নিবৃত্ত হইতে পারে না; কিন্তু জাগ্রাবস্থায় বিবেক-শক্তি দ্বারা নিবৃত্ত হয়; সেইরূপ জীৰ দেহাভিমানাবস্থায় তাহা হইতে নিবৃত্ত হইতে পারে না । জীবাত্মা অনাদি-অবিদ্যা-সম্বন্ধ-বলে দেহাভিমানী হইয়া রাগ দ্বেষাদি সঙ্কুল মিথা সংসারে আবদ্ধ হন। হে শুভে । অন্তঃকরণই সংসারের কারণ ; অন্তঃকরণই বন্ধহেতু ; জীবাত্মা অস্তঃকরণের সহিত মিলিত হইয়৷ অন্তঃকরণ-ধর্ম্ম মুখ দুঃখাদি ভোগ করিয়া থাকেন। যেমন স্ফটিক মণি, স্বভাবতঃ শুক্লবর্ণ হইলেও অলক্তকাদির সান্নিধ্যে সেই সেই-বর্ণক্রান্ত বলিয়৷ বোধ হয় ; কিন্তু সে বর্ণ তাহার বাস্তবিক নহে, সেইরূপ বিশুদ্ধ আত্মা, অন্তঃকরণ ও ইন্দ্রিয়াদির সন্নিহিত হওয়াতে লোকে জোর করিয়া তাহাকে সংসারী মনে করে। আত্মা, নিজের অনুমাপকঅস্তঃকরণ-সম্বন্ধ-বশতঃ অবিবেকী হইয় অন্তঃকরণজন্ত বিষয়াদি ভোগ করতঃ অস্তঃকরণ-গুণে আবদ্ধ হওয়াতে অবশভাবে সংসার-বদ্ধ হইয়া থাকেন। আদেী জীবাত্মা রাগ-দ্বেষাদিরূপ অন্তঃকরণ গুণ লাভ করিয়া সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক—বিবিধ কর্ম্ম করেন, তদনুসারে উত্তম মধ্যম অধম গতি লাভ হয়। জীব খণ্ড-প্রলয় পর্য্যন্ত এইরূপে ভ্রমণ করেন, খণ্ড-প্রলয়-সময়ে বাসনা ও অদৃষ্ট্রের সহিত অন্তঃকরণে মিলিত হইয়া অনাদি-অবিদ্যায় লীন হইয়া থাকেন; পুনর্ব্বার স্কৃষ্টিকালে পূর্ব্ববাসনা ও অদৃষ্টের সহিত আবির্ভূত হন; বারংবার এইরূপে জীবাত্মা অবশভাবে কুলাল চক্রের ন্তায় ভ্রমণ করিতেছেন। যে সময় জীব পূর্ব্বকৃত পুণ্যবলে মদ্ভক্ত শাস্ত-প্রকৃতি সাধু জনের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেন, সেই কালে আমাতে ভক্তি এবং আমার লীলা-শ্রবণে অতিশয় শ্রদ্ধা লাভ করেন ; অনস্তর ভক্তি হইলেই তাহার অনায়াসে স্বরূপ-বিজ্ঞান হয়, তখন গুরুর প্রসাদে “তত্ত্বমসি” ইত্যাদি বাক্যার্থ জ্ঞান হওয়ায় নিদিধ্যাসন বলে ক্ষণমধ্যে আত্মাকে—দেহ, ইন্দ্রিয়, মন, প্রাণ ও অহঙ্কার হইতে বিভিন্ন সত্য আনন্দময় জ্ঞান করিয়া সদ্যই মুক্তি লাভ করেন, আমি যাহা বলিলাম তাহ সত্য । যে ব্যক্তি এই সমস্ত আমার কথিত বাক্য অনবরত মনে মনে আলোচনা করে, তাহাকে সংসার-দুঃখ কদাচ স্পর্শ করিতে পারিবে না; তুমিও আমার কথিত বাক্য সকল বিশুদ্ধ-চিত্তে আলোচনা কর ; তাহা হইলে আর দুঃখ-রাশি তোমাকে স্পর্শ করিতে পারবে না এবং তুমি কর্ম্ম বন্ধন হইতেও মুক্তি লাভ করিতে পারবে। হে স্বঙ্ক! হে শুভে! পুর্ব্বজন্মে তুমি আমার প্রতি একান্ত ভক্তি ༢”ལྡན། ཀམ་ কারণে তোমাকে