পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২ চতুদিকে ধাবমান হইতেছে। প্রভো! ইহারা সকলেই ফল-মূল ভোজী এবং আপনার জাজ্ঞাকারী। এই আমার মন্ত্রিশ্রেষ্ঠ ভল্লুকরাজ বিচক্ষণ বীর জাম্ববান। ইনি বহুকোটি ভল্লুকের অধিপতি। এই বিখ্যাত হনুমান ; ইনি মহাবল পরাক্রান্ত, বায়ুপুত্র, অতিতেজঙ্গী, এবং বুদ্ধিমানদিগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ; ইনিও আমার মন্ত্র। নল, নীল, গবয়, গবাক্ষ, গন্ধমাদন, শরভ, মৈন্দব, গজ, পনস, বলীমুখ, দধিমুখ, সুষেণ, তার এবং হনুমানের পিতামহ গর্ত্তীর প্রকৃতি বলবান্‌ কেশরী—হে রঘুবীর। ইহারা আমার সেনাপতি । প্রধান দেখিয়া কয় জনের উল্লেখ করিলাম। ইহার সকলেই মহাত্মা ; মহাবীৰ্ঘ্য এবং ইস্রাতুল্য পরাক্রমশালী। হৰ্ছাদিগের প্রত্যেকের অধীনে কোটি কোটি বানর-যুথ ; ইছারা সকলেই দেবাংশ-সস্তৃত এবং সকলেই আপনার অজ্ঞাকারী। ইনি বালিনন্দন বিখ্যাতনামা মহাবীর ঐন্ধান্‌ অঙ্গদ ; ইহার বল বালিতুল্য এবং ইনি রাক্ষস-সৈন্য-সংহারক। ইষ্টার এবং অন্ত অনেকে আপনার জন্ত জীবন উৎসর্গ করিয়া রাখিয়াছে বানরগণ পর্ব্বতাগ্র দ্বারা যুদ্ধ করে এবং শত্রুনাশনেও সুদক্ষ ; হে রঘুবর ! যথেচ্ছ আজ্ঞা করুন, সকলেই আপনার বশবর্ত্তী। রামচন্দ্র আনন্দাশ্র পূর্ণনয়নে নুগ্রীবকে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন;–“সুগ্রীৰ ! তুমি কার্য্যের গুরুতর উপলব্ধি করিয়াছ। যদি তোমার অভিপ্রায় হয় ত জানকীর অন্বেষণ করিতে আদেশ কর”। বানরশ্রেষ্ঠ সুগ্রীব রাম-বাক্য শ্রবণ করিয়া প্রীতচিত্তে বলবান বানরদিগকে পাঠাইয়া দিলেন। অন্য সকল দিকে সত্বর বিবিধ বানরগণকে পাঠাইয়া অঙ্গদ, জাম্ববান, মহাবল হনুমান, নল, সুষেণ, শরভ, মৈদ এবং দ্বিবিদ– এই সকল বানরগণকে অতিশয় বলবান বোধে দক্ষিণদিকে যত্বপূর্বক পাঠাইলেন ;–এবং এই কথা বলিয়া দিলেন ;–“তোমরা মঙ্গলময়ী জনকনন্দিনীকে যত্বপূর্বক অন্বেষণ কর গিয়া ; কিন্তু একমাসের মধ্যে ফিরিয়া আসিবে। আমার আদেশ বিষ্কৃত হইও না। হে বানরসকল সীতাদর্শন ন পাইয়া যদি একমাসের উদ্ধ একদিন অতিবাহিত কর; তাহা হইলে আমি জেমাদিগের প্রাণদণ্ড করিব”। সুগ্রীব এইরূপে ভীমবিক্রম বানরদিগকে পাঠাইয়া ঐরামকে প্রণতিপূর্ব্বক তদীয় পার্থে উপবেশন করিলেন। পবননন্দনকে যাইতে দেখিয়া রাম এই কথা বললেন;–“অভিজ্ঞানের জন্য আমার নামাক্ষরযুক্ত এই আমার উত্তম অঙ্গুরীয় সীতাকে নির্জনে ধবে ; হে কপিশ্রেষ্ঠ। একাৰ্ষ্যে তুমিই অধ্যাত্ম রামায়ণ । সমর্থ; আমি তোমার সমস্ত বলবুদ্ধি অবগত আাছি ; বাও পবনতনয় । তোমার যাত্রা শুভ হইবে” । এইরূপে কপিরাজ সীতান্বেষণে পাঠাইলে, অঙ্গদপ্রভৃতি বানরগণ সেই সেই স্থানে ভ্রমণ করিতে থাকিল; একদা তাহার বিন্ধ্যবনে ভ্রমণ করিতে করিতে পর্ব্বতোপম ভীষণাকার পশু-গজ-ভোজী একটা রাক্ষসকে দেখিতে পাইল । কোন কোন বানরশ্রেষ্ঠগণ “এই রাবণ", এই বোধ করিয়া কিল কিল শব্দ করত তৎক্ষণাৎ তাহাকে মুষ্টি আঘাত করিতে লাগিল ; কিয়ংক্ষণ পরে এ রাবণ নহে’, এই বলিয়া সেই সকল বানরশ্রেষ্ঠ অন্য এক অরণ্যানীতে গমন করিল ; তথায় তৃষ্ণার্ত্ত হইয়া জল পাইল না। পিপাসায় তাহাদিগের কণ্ঠ, ওষ্ঠ ও তালু বিশুদ্ধ হইল। অনন্তর মহাবনে ভ্রমণ করিতে করিতে তথায় তৃণ-গুল্মাবৃত মহৎ গহবর দেখিতে পাইল । তথা হইতে আদ্র-পক্ষ বক এবং হংসমণ্ডলী নিঃস্থত হইতেছে দেখিয়া স্থির করিল এখানে নিশ্চয় জল আছে । “আমরা মহা গুহাতে প্রবেশ করি”; এই বলিয়া হনুমানূ অগ্রে তাহাতে প্রবেশ করিল, পরে সকলেই পরস্পর বাহু দ্বারা রাহু ধারণ করত উৎসুক চিত্ত্বে সেই হনুমানের অনুসরণ করিল। কপিশ্রেষ্ঠগণ, অন্ধকারে বহুদূর গমন করিয়া মণি-সদৃশ-কুনির্ম্মল সলিল-পূর্ণ জলাশয় ; পরিণত-ফল-ভরে নম্র কল্প-বৃক্ষসদৃশ বৃক্ষরাজি ; এবং নিখিল গুণসম্পন্ন ও মণিবস্ত্রাদি-পূর্ণ গৃহশ্রেণী তাহাদিগের নয়নপথে পতিত হইল ; দেখিল সেই সমস্ত গৃহে দ্রোণ ( পরিমাণ বিশেষ) পরিমিত মধু এবং দেবভোজ্য অন্ন রহিয়াছে অথচ মনুষ্যের নাম গন্ধ নাই ; ইহাতে তাহারা বড়ই আশ্চর্য্যান্বিত হইল। (কিয়ৎক্ষণ পরে ) দেখিতে পাইল ; সেই ভবনমধ্যে দিব্য কনকাসনে প্রভ-শালিনী, ধ্যান-মগ্ন), চীরবসন পরিধান এবং যোগাবলম্বিনী এক যোগিণী রমণী একাকিনী বসিয়া আছেন। বানরগণ, ভয়-ভক্তিসহকারে সেই মহাভাগাকে প্রণাম করিল। সেই সকল বানরগণকে অবলোকন করিয়া দেবী কহিকেন;—“তোমরা কি জন্ত আসিয়াছ ? কোথা হইতে আসিয়াছ ? এবং কাহার দৃত ? আমার অধিকৃত স্থানে বলপূর্বক প্রবেশ করিলে কেন ?” তাহ শুনিয়া হনুমান কহিল –“দেবি। আপনার নিকট সকল কথা বলিতেছি শ্রবণ করুন,-ক্ষমতাশালী ঐীমান্‌ রাজা দশরথ অযোধ্যার অধিপতি ; তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র রাম নামে বিখ্যাত; এই মহাভাগ,পিতৃ-আজ্ঞার