পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লঙ্কাকাণ্ড । সংজ্ঞালাভ করিয়া বীর ইস্রজিৎ, বীর দশরথ-তনম্নকে নিশঙ্কচিত্তে অবস্থিত দেখিল । তখন কোপকষায়িতলোচনে সৌমিত্রির অভিমুখে ধাবমান হইল। ধনুতে শর সকল যোজিত করিয়া লক্ষণকে এই কথা বলিল "প্রথম যুদ্ধে যদি আমার পরব্রুম না দেখিয়া থাক, তাহা হইলে আজ তাহা তোমাকে দেখাইতেছি এখন একটু স্থিরভাবে অবস্থান কর” এই বলিয়া সপ্তশরে লক্ষ্মণকে ও তীক্ষুধার উংকৃষ্ট । দশ বাণে হনুমানকে বিদ্ধ করিল। অনন্তর বীর্যবান্‌ ইন্দ্রজিৎ দ্বিগুণ ক্রোধে কার্শক মুক্ত এক শত শর দ্বারা বিভীষণকে গাঢ়বিদ্ধ করিল। লক্ষ্মণও শূরবর্ষণ করিতে লাগিলেম । ইন্দ্রজিতের স্বর্ণপ্রভ. বর্ণ লক্ষ্মণের বাণ অতীব বিদ্ধ হইয়া রথমধ্যে পতিত হইল ; তথায় আবার তিল তিল খণ্ডিত হইয়া ভূতলে পতিত হইল। অনন্তর রাবণনন্দন, অতিশয় কুপিত হইয়। রণস্থলে ভীম বিক্রম বীর লক্ষ্মণকে সহস্র শরদ্বারা বিদ্ধ করিল। লক্ষ্মণেরও দিব্যকবচ বিশীর্ণ ও পতিত হইল। তাহারা পরস্পরে পরস্পরের কর্ম্মের প্রতিকার করিতে লাগিলেন ; সাতিশয় নিশ্বাস পরিত্যাগ করত পরস্পরের প্রতি পরস্পরে ধী মান হইয়া তুমুল যুদ্ধ কৰিতে লাগিলেন। র্তাহাদিগের উভয়ের সর্বাঙ্গই শরনি. করে আচ্ছন্ন এবং উভয়েই শোণিতাক্ত হইলেন। এইরূপেই সেই বীরদ্বয় পরস্পরে অনেকক্ষণ যুদ্ধ করেন, উভয়েই মহাবল মুতরাং কাহারও জয় পরাজয় হয় নাই । ইতিমধ্যে বীর লক্ষ্মণ, পঞ্চশরে বাবণনন্দনের সারথি ও অশ্ব-সমেত রথ চুর্ণ করিয়া ফেলিলেন ; হস্ত লাঘব প্রদর্শন করত তাহার কর্ম্মক ছেদন করিলেন। সেই ইন্দ্রজিৎ সত্বর অন্য এক উত্তম ধনু লইয়। তাহাতে জ্যারোপণ করিল। লক্ষ্মণ তিন বাণে সেই শরাসনও ছেদন । করিলেন। এবং সেই ছিন্ন কার্শ্বক রাক্ষসকে | বহুতর শর প্রহারে বিদ্ধ করিলেন । ভীম-পরাক্রম ; ইন্দ্রজিং পুনরায় অন্য ধনু গ্রহণ করিয়া স্বর্য্যসন্নিভ বহুতর নিশিত শরে লক্ষ্মণকে, এবং সমস্ত বানরগণকে বিদ্ধ করিলেন ; তাহার শরজালে দিজুগুল আচ্ছন্ন হইল। অনস্তর লক্ষ্মণ, ঐন্দ্র অস্ত্র গ্রহণ পূর্ব্বক রাবণতনয়ের প্রতি লক্ষ্য লাগিলেন ;- যদি দাশরথি রাম-ধর্ম্মাত্মা সত্যপ্রতিজ্ঞ এবং ত্রিজগতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হন, তাহ >>> হইলে হে বাণ ! এই রাবণিকে নিহত কর।” বীর লক্ষ্মণ বাণকে এই কথা বলিয়া আকর্ণ পর্য্যত্ব শরাসন আকর্ষণ পূর্ব্বক রণক্ষেত্রে ইশ্রজিতের প্রতি সেই বাণ ত্যাগ করিলেন । তখন সেই বাণ ইন্দ্রজিতের উষ্ণবসম্পন্ন, উজ্জ্বল-যুগুল-শোভিত মুত্র মস্তক ছেদন করিয়া তাহার শরীর হইতে ভূতলে নিপতিত করিল। অনন্তর, দেবগণ পরম আনন্দিত হইয় রঘুবর লক্ষ্মণের গুণকীর্ত্তন এবং তাহার মুহুমুই স্তব করিতে করিতে পুষ্পবৃষ্টি করিতে লাগিলেন । ভগবান্‌ ইন্দ্র, দেবগণ ও মহর্ষিগণের সহিত আনন্দ প্রকাশ করিতে লাগিলেন । আকাশেও দেবগণের কুন্দুভি ধ্বনি শ্রুতিগোচর হইল। আকাশ নির্ম্মল হইল ; পৃথিবী নুস্থিরা হইল। রাবণনন্দনকে নিহত দর্শন করিয়া লোকে জয় জয়কার করিতে লাগিল ; তু হাতেই সেই সুমিত্রানন্দন, গতশ্রম হইয় রণক্ষেত্রে শঙ্কলনি করিলেন। অনন্তর বিভু, সিংহনাদ করিয়া জ্যাশন্স করিলেন। বানরগণ, সেই শব্দে পরম আহ্নাদিত হইয়া শ্রান্তিশূন্ত হইল। সৃষ্টচিন্তু বানরেনগণ, স্তব করিতে করিতে তাহার সঙ্গে চলিল ; লক্ষ্মণ, সন্তুষ্টচিত্তে আসিয়া শ্রীরামকে দর্শন করিলেন । অনস্তর হনুমান এবং বিভীষণের সহিত লক্ষ্মণ সবিনয়ে জ্যেষ্ঠভ্রাতা প্রভু নারায়ণ রামকে বন্দনা করিলেন ; এবং কহিলেন “হে রঘুবর। আপনার প্রসাদে ইস্রজিং যুদ্ধে নিহত হইয়াছে" ৷ লক্ষ্মণের নিকট এই কথা শুনিয়া রঘুবর রাম আনন্দিত হইয়া অনুরাগ সহকারে প্তাহাকে আলিঙ্গন ও র্তাহার মস্তকাম্ৰাণ করিমু সস্নেহে এই কথা বলিলেন;-“লক্ষ্মণ । অতি উত্তম তুমি দুষ্কর কার্য্য করিয়াছ । আমি তুষ্ট হইলাম ; হে শত্রুনাশন ! মেঘনাদকে বধ করায় তুমি সমস্তই জয় করিলে, ভাই । তিন দিন তিন রাত্রি যুদ্ধ করিয়া কতই কষ্ট্রে সেই বীরকে নিপতিত করিয়াছ। আজ আমাকে তুমি শত্রুশূন্ত করিলে ; (কেন না ) রাবণ পুত্রশোকবশতঃ নিশ্চয়ই আমার সহিত যুদ্ধ করিতে নিৰ্গত হইলে ; আমিও সেই রাবণকে বধ করিব । * এদিকে রাবণ, মহাবল মেঘনাদকে লক্ষ্মণের হস্তুে নিহত শুনিয়া মুছিত হইয়া ভূতলে পতিত হইল। করিয়া কাম্মুকে যোজনা করিলেন; অনন্তর } বীর লক্ষণ দৃঢ়তররূপে আকর্ণ পর্যন্ত কার্শ্বক আৰু ! র্ষণ করিয়া ঐরামের পাদপদ্ম স্মরণ করত বলিতে | অনস্তর সংজ্ঞা পাইয়া পুনরায় উঠিয়া বসিল । রাবণ, পুত্রশোকে সাতিশয় কাতর হইয়৷ বিলাপ করিতে লাগিল; পুত্রের গুণগ্রাম এবং কর্ম্ম সকল স্মরণ করত শোক প্রকাশ করিল। “আজ সমস্ত দেবগণ, লোকপালগণ এবং মহর্ষিগণ, ইস্রজিৎ, নিহত হইয়াছে।