পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রয়োদশ তাধ্যায় । অনন্তর রাম যে খানে উপস্থিত ছিলেন, সেখানে—সহস্রাক্ষ ইত্র,যম, বরুণ, মহাতেজ কুবের, বৃষবাহন মহাদেব, ব্রহ্মজ্ঞ প্রধান ব্রহ্মা, মুনিগণ, সিদ্ধগণ, চারণগণ, পিতৃগণ, ঋষিগণ, সাধ্যগণ, গন্ধর্ব্ব, গণ, অপরাগণ, এবং সৰ্পগণ—ইইরা ও অন্ত সকলে শ্রেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ বিমান-আরোহণে আসিয়া উপস্থিত হইলেন ; এবং তাহারা কৃতাঞ্জলি হইয় পরমাত্মা রামকে বলিতে লাগিলেন;–“আপনি সর্ব্ব লোকের কর্ত্ত ও সাক্ষী এবং বিজ্ঞান মূর্ত্তি ; আপনি বসুগণের মধ্যে অষ্টম বসু ; একাদশ রুদ্রের মধ্যে শঙ্কর ; আপনি ত্রৈলোক্যের আদিকর্তা চতুরানন ব্রহ্মা; অশ্বিনীকুমার যুগল, আপনার নাসিকা ; চন্দ্র স্বর্য্য আপনার নয়ন দ্বয় আপনি লোকসকলের আদি ও অন্ত; আপনি নিত্য, একমাত্র, সদ-প্রকাশ, সদাশুদ্ধ, সদাবুদ্ধ সদামুক্ত,নিগুণ এবং অদ্বিতীয়। যাহারা আপনার মায়ায় আবৃত, তাহদিগের নিকটেই আপনি মনুষ্য বলিয়া প্রতীয়মান হন। হে রাম। যাহারা আপনার নাম স্মরণ করে; সেই সকল মায়া-মুক্ত ব্যক্তির নিকট চৈতন্তস্বরূপে প্রতিভাত হন। রাবণ আমাদিগের তেজ এবং অধিকার হরণ করিয়াছিল; আজ আপনি সেই তুষ্টকে নিহত করিলেন, আমরা আবার স্বস্বপদ প্রাপ্ত হইলাম।” দেবগণ এইরূপ বলিতে থাকিলে সাক্ষাৎ পিতামহ ব্রহ্মা, প্রণত হইয়া সত্যপথে অব. স্থিত শ্রীরামকে বলতে লাগিলেন-আপনি ত্রিলোক স্থিতির মূল দেব বিষ্ণু; তত্ত্বজ্ঞানিগণ হৃদয় মধ্যে আপনাকে ধ্যান করেন; সুখ-দুঃখ-প্রভৃতি—গ্রাহ ও ত্যজ্য দ্বন্দ্ব আপনাতে ওঁমান নাই। আপনি পরাৎপর, অদ্বিতীয়, সত্তামাত্র, সকলের অন্তর্যামী এবং জ্ঞানস্বরূপ; আপনাকে বন্দনা করি। নিশ্চয়বুদ্ধি করিয়া হৃদয়ে প্রাণবায়ু এবং অপান বায়ু রোধ, ঈশ্বর সম্বন্ধে সকল সন্দেহ নিবারণ এবং বিষয়সমূহ পরিত্যাগ করিয়া মোহ-মুক্ত যতিগণ যে ঈশ্বরকে হৃদয়ে প্রত্যক্ষ করেন; সেই মণি-মুকুট শোভিত স্বর্য্যপ্রভ রামচন্দ্রকে বদনা করি। লোকরঞ্জন রমণীয় রাম আপনাকে বন্ধনা করি ; আপনি মায়া তাঁত, মাধব, এবং জগতে আদি ; আপনার আদি নাই; পরিমাণ নাই; আপনি জজ্ঞাননাশন মুনিগণের বন্দনীয়, ষোগিণের চিস্তনীয়, যোগমার্গ প্রবর্ত্তক এবং পরিপূর্ণ। আপনি জহুর-সংহারীর বেশধাৰী । ঐাম আপনাকে বদনা করি; আপনি ভাব-জ্ঞান অধ্যাত্ম-রামায়ণ । অভাব-জ্ঞানের অগোচর ; মহাদেব প্রভৃতি ভোগে অনাসক্ত ব্যক্তিগণ আপনার পাদপদ্মযুগল পূজা করেন; আপনি নিত্য, শুদ্ধ, বুদ্ধ, অনন্ত এবং প্রণব বাচ্য। আপনি আমার নাথ ; আমি যাহা যাহা প্রার্থনা করি আপনি সেই সকল কার্য্য সম্পাদন করেন । আপনি অভিমানশূন্ত ; (অথবা পরিচ্ছেদশূন্য), মাধব স্বরূপ ; ও ত্রিলোক-ধারক, ভক্তিদ্বারা আপনাকে প্রাপ্ত হওয়া যায় ; যাহারা আপনার স্বরূপ চিন্তা করে,আপনি তাহাদিগকে সংসার-মুক্ত করেন ; এবং যাহাদিগের চিত্ত যোগাভ্যাসদ্বারাবিশুদ্ধ; আপনি তাহাদিগের সহচরস্বরূপ । আপনি, লোক সকল স্বজন ও সংহার করেন, আপনি সমস্ত লোকের পরম ঈশ্বর, লৌকিক প্রমাণদ্বারা আপনাকে বুঝ। যায় না, আপনি ভক্তিভাব এবং শ্রদ্ধ-ভাবাপন্ন পুরুষদিগের সেব্য ; আপনি ইন্দীবর খামল সুন্দর রাম, আপনাকে বন্দনা করি। হে মাধব ! আপনি ইন্দ্রিয়ের অগোচর, ইন্দ্রিয়শূন্ত (অথবা পরিচ্ছেদশূন্ত ) এবং মুনিগণের মাননীয় ; কোন অভিমান মূঢ় ব্যক্তি আপনাকে জানিতে সমর্থ ? আপনি শিব প্রভৃতির বন্দনীয় হইয়াও বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ রূপে দেবগণের বন্দনা করিয়াছেন ; আপনি সেই পরমসুখ-মূল রাম আপনাকে বন্দনা করি। বেদ প্রভৃতি নানা শাস্ত্রের প্রতিপাদ্য, নিত্যানন্দ, নির্ব্বিকল্পক জ্ঞান বিষয়, অনাদি হইয়াও আমার প্রার্থনায় মানুষ- ভাব-প্রাপ্ত মরকত্ব প্রভ মথুরানাথ রামকে বদনা করি। পৃথিবীতে যে মনুষ, অভীষ্ট-বস্ত-দাতা ঈশ্বর শুমবর্ণ রামকে ধ্যান করত শ্রদ্ধাসহকারে ব্রহ্মজ্ঞানীজনক এই ব্রহ্মকুত আদ্য স্তং পাঠ করে, সেই ধ্যানকারী পুরুষ, সকল পাপ হইতে মুক্ত হয়। লোক-সাক্ষী-বিভাবমু হুতাশন ব্রহ্মকৃত রামস্তব শ্রবণপূর্ব্বক, বিমল-অরুণ-কাস্তি রক্ত-বসন-পরিধান দিব্য বিভূষণে অলস্কৃত হইয়া বিরাজমান জনক-তনয়াকে ক্রোড়ে লইয়া শরণাগত দিগের নিখিল পীড়ানাশক রঘুবরকে বলতে লাগিলেন;–“হে রঘুনাথ! হে হরে! দশাননের প্রাণ বিনাশের জন্য মায়াসীতা নির্ম্মাণ করিয়া পূর্ব্বে বনে ধাহাকে আপনি আমার নিকট রাখিয়াছিলেন, (এক্ষণে) সেই দেবী জানকীকে এই গ্রহণ করুন; হে প্রভু ! পুত্র ও বান্ধবগণের সহিত দশানন নিহত হওয়ায় তুভার বিদূরিত হইয়াছে। সেই প্রতিবিম্বরূপিণী সীতা ষে জম্ভ নির্ম্মিত হইয়াছিলেন, সে বিষয়ে কৃতকার্য্য হইয়া অস্তুষ্ঠিত হইয়াছেন।” অন স্তুর রাম জানন্দসহকারে অগ্নির প্রতি সম্মান প্রদ