পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 অধ্যাপক পালন । আমার মা থাকলে তার কাছ থেকে যে প্রশ্রয়টুকু পেতাম সেটুকু অঞ্জলি ভরে তুমিই দিয়ে গেছ । লতা যেমন তার পত্রপুটে প্রভাতের আলো পান করে অথচ কোনক্রমে তার ধার শুধতে পারে না, তেমনি তোমার কাছে পেয়েছি আমি কত উৎসাহ, কত স্নেহের বর্ষণ । তা চিরন্তন হয়ে আছে আমার নাড়ীতে, তা ফিরিয়ে দেবার নয়। মাটির ডেলা যেমন আকাশ থেকে আপনি পৃথিবীর বুকে ছুটে আসে অথচ সে জানে না কেন ছুটে আসে, তেমনি আমার মন ছুটত তোমার দিকে। সে ছিল একটা অন্ধ আকর্ষণ, ধোয়াটে ছিল তার রূপ । কিন্তু যখন বয়স বাড়তে লাগল এবং চেতনা উঠ ল প্রখর হয়ে, ধূমকেতুর ধোয় গেল কেটে, তার নক্ষত্রটা উঠল জলে’, যেন ঠাকুরঘরে আরতির প্রদীপ । তুমি ত জান আমাদের দেবসেবার কোনও বালাই নেই । কিন্তু সেবার পিসীমা এসে উঠলেন আমাদের বাড়ীতে, সঙ্গে নিয়ে এলেন র্তার রাধামাধব ঠাকুর । পুজে করতেন তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে, কেউ আমরা ঘরে ঢুকতে পেতুম না। একদিন করলেন তিনি ঠাকুরের শীতলী উৎসব । ঠাকুরঘরের বারান্দায় ডাক পড়ল আমাদের প্রসাদ খাওয়ার । সেদিন তাকিয়ে দেখলুম ঠাকুরঘরের ভিতর উকি মেরে । ধুনো ও ধূপকাঠির গন্ধে ঘরটি হয়েছে আমোদিত । ঘরের ভিতরের চারিদিকের পরিচ্ছন্নতা ও শুচিত সমস্ত মিলিত হয়ে বুকের মধ্যে একটা আশ্চর্য্যরকম দোল লাগল। জীবনে যেন প্রথম বুঝতে পারলুম কাকে বলে পবিত্রতা । এ পবিত্রতা অনুভব করা যায়, বলা যায় না ; একে দূর থেকে দেখা যায়, ছোওয়া যায় না। এই যে চারিদিকে আশ্চর্য্য স্বগন্ধে ও রূপে ফুটে রয়েছে অৰ্কিড়গুলি, মনে এদের প্রতি লোভ হয় । যেন সত্যি মনে হয়, কোচড় ভরে এদের নিয়েছি, কাণে পরেছি