পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ২৩৫ বেগ তেমনি করে গেল থমকে, কি ভাবে সে তাকে প্রকাশ করবে তা তার কল্পনায় এল না । ইতিমধ্যে যে ঘটনাটি ঘটুল তা ঘটুল নিমেষের মধ্যে । মুকুমার যতক্ষণ হতস্তব্ধ হয়ে ছিল ততক্ষণে নিমেষ মধ্যে কানাই কেডে নিল ইন্সপেক্টরের চাবুক, একটি ঘুষিতে করলে তাকে ধরাশায়ী । কানাইয়ের শক্তি ছিল সেই জাতীয় যে রকম শক্তি থাকে আকর্ণবিশ্রান্ত আকৃষ্ট জ্যার উপরে বিন্যস্ত বাণের । তিলমাত্র শৈথিল্যে সে বাণ ছুটে যায় বিদ্যুদ্বেগে, বিদ্ধ করে তার লক্ষ্য, বিচার কল্পনার সে অপেক্ষ রাখে না । এ যেন সেই শক্তি যা দেখা যায় গিরিচূড়ায় নিবদ্ধ উপলবেষ্টিত জলরাশির, তিলমাত্র উপলখগুটি সরে’ গেলেই সে জলরাশি আপন স্বাভাবিক বেগে মুক্ত হয়ে ঝরে পড়তে থাকে ; অপেক্ষ ঈষন্মাত্র আবরণ মোচনের । যখন ঘটনাটা ঘটে? গেল স্বকুমার রইল হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে, তার সাহস হ’ল ন সুজাতার সঙ্গে মিলিত হ’তে । সে লজ্জিত বোধ করল তার সঙ্গে গিয়ে বাডীতে দেখা করতে । আপন ক্লান্তিতে যখন আড়ষ্ট হয়ে পড়েছিল সুজাতা তখন তার সমস্ত ক্লাস্তি ভেদ করে তার চোখে ভেসে উঠতে লাগল বলিষ্ঠ কানাইয়ের কীর্ত্তি । মুকুমারকে যে সে একবার দেখেছিল সে কথা সে বিশ্বত হ’ল না, কিন্তু মুকুমারের হতস্তব্ধতা ও নিশ্চেষ্টতার যথার্থ কারণ সে উপলব্ধি করতে পারলে না । তার মনে হ’ল যে এতকাল যে সুকুমার সর্বদা তার সঙ্গে ঘুরেছে কত সময়ে কত বিপদে উদ্ধার করেছে, কত কাজে তাকে উৎসাহ দিয়েছে, প্রশ্রয় দিয়েছে, আজ একটা কঠোর কর্ত্তব্যের ক্ষণে তার অতখানি ভালবাসা, অতথানি স্নেহ তার কোন মর্য্যাদা পেল না তার হৃদয়ে, স্থান পেল ভীরুতা ! ভীরুতা ও সাহসের অভাব পুরুষকে নামিয়ে আনে নারী-হৃদয়ের শ্রদ্ধার আসন ।