পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રક્ત 8 অধ্যাপক দিকে প্রসারণ । ব্যবহারিক জীবনে যেখানে উদাম বাসনা ফিরছে দুর্দ্দাম হয়ে, যেখানে গভীরের চেয়ে প্রকটের মহিমা বেশী, সেখানে আমরা জালি বড় বড় আলো । সে আলোতে আছে তেজ, উত্তাপ, তার উদ্দেশু দৈনন্দিন ভোগ ব্যাপারের কাজ । রাত্রিকে তা করে দিনের মত শুভ্র কিন্তু সেখানে মাটির প্রদীপশিখার গভীরতা নেই । মাটির সেই দীপশিখা আমরা রেখেছি আবদ্ধ করে আমাদের মন্দিরে, কোনও সময় তাকে স্মরণ করি, কিন্তু ব্যবহার করি না । তেমনি আমাদের হৃদয়ে রয়েছে যে স্বচ্ছ প্রেমের দীপশিখাটি, যার গাম্ভীর্য্যের মধ্যে, পবিত্রতার মধ্যে প্রস্বত করে দেয় হৃদয়ের পবিত্র প্রেমবৃত্তিকে, তার কথা আমরা সকল সময় এমনি ভুলে যাই যে মনে হয় সে যেন নেই । আমরা প্রদীপ চাই না, চাঠ আগুন ; স্নিগ্ধতার আনন্দ চাই না, চাই দাহের জালা । তাই আমাদের প্রেমের মধ্যে আমরা মেশাই প্রচুর পরিমাণে অশুচি দাহ পদার্থ, যার ফলে একদিকে ওঠে ধোয় আর একদিকে ওঠে উত্তাপ । আমরা গভীরতা চাই না, ছায়া চাই না, চাই ব্যক্ততার নিরাভরণত, চাওয়ার দুর্দ্দাম নৃত্য। তবু দুদিনে আমাদের স্মরণ করতে হয় ঠাকুর ঘরের স্নিগ্ধ আরতির দীপশিখাটিকে। আরতির থালার সেই দ্বীপশিখাটিতেই হয় যথার্থ মঙ্গলের বরণ। প্রকৃতি প্রতিদিন দিনের পিছনে পাঠান আমাদের কাছে রাত্রিকে, আমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে দিনের প্রকট আলোতে যে লাবণ্যের উৎস নিরস্তর নিঝরিত হয়ে পড়ছে, প্লাবিত করছে আমাদের চেতনা ও বুদ্ধিকে, তার যথার্থ রহস্য হচ্ছে স্নিগ্ধ রাত্রির ছায়া-গহনতায় । আলোক-রূপসী তার উর্ব্বশীর নৃত্যে ঝলমল করে’ যে রূপের মোহেতে আমাদের ডুবিয়ে দেয় তার যথার্থ রহস্য নিমগ্ন হয়ে রয়েছে অরূপের গভীরতার মধ্যে ।