পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woo 8 অধ্যাপক যায় না। র্তার খোচা খোচা দাড়ি, অযত্নবিন্যস্ত দীর্ঘ কেশ, বড় বড় নখ, অপরিচ্ছন্ন বেশভূষা, এ নিয়ে তাকে লোকসমাজে বের করা চলে ন। প্রতিভা তাই প্রথম পড়ল স্বামীর উপর কায়িক আক্রমণে । সে বেচার নিতান্ত অনভ্যস্ত এ জীবনে। একদিন চুল কাটলে, একদিন দাড়ি কামালে, একদিন নখ কাটলে হবার কথা নয় । একদিন পরিচ্ছন্ন বেশ করলেই চলবে না, প্রত্যহ নিয়মিতভাবে একটা সাজসজ্জার চাকচিক্যের মধ্য দিয়ে জীবনযাত্রা চালাবার দুঃসহ ক্লেশে অবিনাশবাবু হয়ে পড়লেন বিপর্য্যন্ত । জীবনে তিনি লোকসঙ্গ বড় করেন নি। তারপর পার্টির মধ্যে যাতায়াত নিমন্ত্রণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে যে সমস্ত নিতান্ত ছেলে মাহুষী আলোচনা চলে, হাস্তরসিকতা ও পরিহাসকুশলতা চলে, তা তার জীবনকে দুর্ব্বহ করে তুলল । স্বামীর জীবনযাত্রার প্রতি প্রতিভার তিলমাত্র সহানুভূতি ছিল না । স্বামীর পাণ্ডিত্যের খ্যাতি, তার পাউডার-বিন্যস্ত মুখের ঔজ্জ্বল্য, তার গৌরব বাড়িয়ে তুলুক, এ বিষয়ে তার আপত্তি ছিল না, কিন্তু জীবনযাত্রার যে কল্পনা নিয়ে সে এই ধনীসংসারে ঢুকেছিল তা তিলমাত্র বদলাতে সে রাজী হল না । কি একনিষ্ঠা ও তপস্তার দ্বারা গভীর জ্ঞান জন্মাতে পারে সে সম্বন্ধে তার বোধ ছিল না । তাই সে তার স্বামীর ব্যবহারে সর্বদাই ক্ষুব্ধ হয়ে থাকত এবং বাক্যবাণে ও শ্লেষে উাকে নিরস্তুর জর্জরিত করে’ রাপত। অবিনাশবাবুর মধ্যে যে তপস্বী বাস করত সে ক্ষুন্ন হয়ে বিদ্রোহ করতে চাইত, কিন্তু তার মধ্যে যে ভদ্র ও বিনীত নিরীহ মানুষটি ছিল সে কোনও প্রতিবাদ করতে সাহস পেত না । দু’একসময়ে ক্রোধ হলেও তিনি নিজেকে দমন করতেন, ভাবতেন—রাগ করলেই ঝঞ্চাট আরও বাড়বে, যা করবার করুক গে, আমাকে একটু স্বস্তি দিলেই হয়। কিন্তু এমন অবস্থাতে স্বস্তি পাওয়া