পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৩৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ৩২৭ করেছিল একটা অসাধারণ নৈপুণ্য । কণ্ঠ ছিল তার অতি সুমিষ্ট । সেই কণ্ঠকে সে সাবলীল ভঙ্গীতে নিয়ে যেত নক্ষত্রলোকে, আবার অবরোহক্রমে নামিয়ে নিয়ে আসত কাণের দ্বারের ঈষৎ গুঞ্জনের মধ্যে । অবিনাশবাবুর কণ্ঠ ছিল না, তিনি জানতেন বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে স্বরপ্রণালীর বিশ্লেষণ। সঙ্গীত শাস্ত্রেরও পুথিগত বিদ্যা তার যথেষ্ট ছিল । গোলাপের মধ্যে যখন তিনি দেখলেন কেমন ললিত ভঙ্গীতে বাগ দেবী করেন স্বরের মধ্যে মূর্ত্তিপরিগ্রহ, তখন তিনি পাগল হয়ে গেলেন স্বরচর্চায়। প্রতিভা চায় বিলাসের সহিত এক আধটি পোষাকী গান অভ্যাস কর, অবিনাশবাবু চান তার তত্বের মধ্যে প্রবেশ করা, কাজেই উভয়ের একত্রে সঙ্গীত চর্চাব মধ্যে এল বিরোধ । এদিকে অবহেলিত, অবজ্ঞাত শাস্ত্ররাশির মধ্য থেকে যে অভিমানের ক্রন্দন নিঃশব্দে ধ্বনিত হয়ে উঠুত গভীর রাত্রিতে বন্ধু অবিনাশের জন্য, সে ক্রন্দনে অবিনাশ বাবুর নিদ্রা যেত ভেঙ্গে । এই সমস্ত শাস্ত্র ফেলে’ তিনি যে বিলাসের মোহে, জড়িত হয়ে পড়ছেন, এ বোধ তাকে বারংবার ধিক্কার দিতে লাগল। অসম্ভব হ’ল অবিনাশ বাবুর পক্ষে এই জীবন চালানো । তিনি প্রতিভাকে বল্লেন—“তুমি একটু ভাল করে’ লেগে যাও সঙ্গীতচর্চায় গোলাপের সঙ্গে !” গোলাপ হ’ল বাড়ীর নিত্য অতিথি, সকালে সন্ধ্যায় রাত্রিতে। অবিনাশ বাবু ফিরে গেলেন লাইব্রেরীতে । গোলাপকে নিয়ে নিরস্তুর সঙ্গীত চর্চা করার মধ্যে প্রতিভার একটা উদ্দেশ্য ছিল। সে উদেশ্ব হচ্ছে অবিনাশ বাবুর মনের মধ্যে ঈর্ষ্য। জাগানো । গোলাপকে নিয়ে ঈর্ষ্যা জাগলেই অবিনাশ বাবু তার পুথিপত্র ছেড়ে প্রতিভার পিছনে লেগে যাবেন তার হৃদয় জয় করতে এই ছিল তার ধারণা। প্রতিভার এই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হওয়াতে সে গেল