পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७8२ অধ্যাপক । কাহিনী, আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত দরদীভাবে তাদের শিক্ষা দিতে চাইত ও তাদের হৃদয়কে কোমল করে আনতে চেষ্টা করত যা মঙ্গল, যা শ্রেয় সেইদিকে । এমনি করে’ চলতে লাগল একদিকে তার শিক্ষাদান এবং তার অভিজ্ঞতাও বাড়তে লাগল দেশের সেই বিরাট জনসাধারণের বিষয়ে যাদের সম্বন্ধে আমাদের ইংরেজীশিক্ষিতর প্রায় কিছুই খবর রাখেন না। আমাদেব ইংরেজীশিক্ষিতদের কাছে দেশ বল্পে যারা কল্পনার মধ্যে আবিভূত হয় তারা মুষ্টিমেয় । এই মুষ্টিমেয় লোকেরই শিক্ষাদীক্ষা, ধারণা বিশ্বাস, আদর্শ, চলাফের, রীতিনীতি প্রভৃতি সম্বন্ধে আমাদের যা কিছু অভিজ্ঞতা, আর পর্বতপ্রমাণ বিরাট জনরাশি সম্বন্ধে আমাদের না আছে কোনও জ্ঞান, ন আছে কোনও দরদ । তাদের আচারব্যবহার, রীতিনীতি, আয়ুব্যয়, পরস্পরের সম্বন্ধ প্রভৃতি বিষয়ে আমাদের কিছুই জানা নেই। এদের সঙ্গে আলাপ করে এবং পূর্ব্বে সে গ্রামে গ্রামে ঘুরে যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল তাতে সে ক্রমে উপলব্ধি করতে লাগল যে এত বড় জনসমুদ্রকে ঈষন্মাত্রও বিচলিত করতে হ’লে দরকার হয় একটা প্রবল ঝটিকার । বর্ষের পর বর্ষ ধরে এই ঝটিকার আন্দোলনে যদি কিছু সাড় ওঠে এই নিঃসাড় জনসাধারণের মধ্যে । সে অনুভব করতে পারল দুএকজন লোকের ক্ষীণ কষ্ঠের চেষ্টায় যে শব্দতরঙ্গ তোলা যাবে বা দু’একজনের চেষ্টায় যে কর্ম্মস্রোত বওয়ানো যেতে পারে, সে তরঙ্গ, সে স্রোত এ মহামরুভূমিতে পড়বামাত্র বিশুষ্ক হয়ে যাবে। তথাপি সে আশ্চর্য্য বোধ করল কেমন করে এই বিপুল জনসাধারণের মধ্যে মহাপুরুষদের বাণী প্রবেশ করেছে এবং এই মরুভূমির মধ্যে যে স্নিগ্ধতা ও শ্রামলতা আছে, যে দরদ আছে, অনেক পাপ, অনেক অনাচার সত্বেও যে সাধুতা আছে, তার বিন্দুমাত্রও থাকত না যদি সে