পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ৩৫১ এমন সময়ে এল ইংরেজ, পর্তুগীজ, ফরাসী । এদের মধ্যে পরম্পর লাগল লড়াই । ইংরেজ রইল কায়েমী হয়ে এবং আস্তে আস্তে গ্রাস করলে সমস্ত ভারতবর্ষ ।” ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন—“ইংরেজদের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় আমরা এমন দেবে গেলাম কেন ?” কানাই বল্লে—“এতদিন ভারতবর্ষ যে সব জাতির সম্মুখীন হয়েছিল তাদের কারও হয় ত ছিল না কোনও ধর্ম্মের বৈশিষ্ট্য, কারুর বা ছিল প্রবল ধর্ম্মের বৈশিষ্ট্য । তাই ভারতবর্ষ ধর্ম্ম ও নীতির মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে আপনার হৃদয় বিস্তৃত করতে পেরেছিল বা বিস্তৃত করবার জন্য উদ্যোগী হ’তে পেরেছিল । কিন্তু ইংরেজের যদিও একটা বিশিষ্ট ধর্ম্ম ছিল, তথাপি ধর্ম্মট ছিল তার গৌণ। সে এসেছিল তার নূতন বিদ্যা নিয়ে—তার জড়বিদ্যা, সমাজবিদ্যা ও রাষ্ট্রবিদ্যা । সে তার ধর্ম্মকে গৌণ করে সেই বিদ্যাকেই করে তুলেছিল প্রধান । সেই বিদ্যাই তাকে দিয়েছিল শক্তি, দিয়েছিল বল। সেই বল প্রকাশ পেয়েছিল তাদের যন্ত্রের মধ্য দিয়ে এবং গড়ে তুলেছিল তাদের বুদ্ধি ও নীতির কাঠামো । এর সামনে এসে ভারতীয় সভ্যতা, যা আপনাকে চাইছিল প্রকাশ করতে ধর্মের মধ্য দিয়ে, তা দাড়াল থম্কে, খেতে লাগল ঘূর্ণী, ঠিক করতে পারলে না যাবে কোন দিকে । সে অবহেলা করল আপন ধর্ম্মকে কিন্তু আয়ত্ত করতে পারল না পাশ্চাত্য দেশের বল ।” ডাক্তার বল্লেন--"তবে যে আপনি আপনার আত্মপ্রকাশের প্রধান মন্ত্র বলে মনে করেছিলেন ভারতের প্রাচীন ধর্ম্মবুদ্ধিকে ও আদর্শকে ইউরোপীয় নীতির বিরুদ্ধে দাড় করানোকে এবং সে জন্য সহ করেছিলেন অনেক ক্ষয়ক্ষতি !” কানাই বল্লে—“এখন দেখছি সেইটিই হয়েছিল আমার ভুল ।”