পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'ఫిహ్రి অধ্যাপক জীবনের পথে চলতে চলতে সর্ব্বদাই আমাদের সন্দেহ আসে যে আমরা ঠিক পথে চলছি কিনা, সমাজ আমাদের কাজের অনুমোদন করছে কি না । যখন কারও কাছে আমাদের কাজের বা চরিত্রের প্রশংসা শুনি তখন আমাদেব অবচেতনার মধ্যে তাকে সমাজের প্রতীক মনে করে আমাদের কাজ যে সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্তে চলেছে এই বোধ লাভ করে দৃঢ়তা, ফলে আমাদের সেই লোকটির কথা ভাল লাগে এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকেও ভাল লাগে । কিন্তু আর এক রকমের ভালবাসা আছে যা অত্যন্ত নিগৃঢ় কারণে উৎপন্ন হয় এবং যা একান্ত অকারণ বা যার কারণ অতি নিগৃঢ় হয়ে রয়েছে আমাদের চিত্তস্বভাবেব মধ্যে। গাছপালা, প্রাকৃতিক দৃশ্য, এই সমস্ত নানা শুন্দর জিনিষ আমরা ভালবাসি । যার সুন্দর বলে’ বিশেষ পরিচয় দেওয়ার নেই, শুধু দীর্ঘ পরিচয় বশত: সংস্কারের মধ্যে যা দৃঢ়মূল হয়ে রয়েছে, এমন অনেক জিনিষ আমরা ভালবাসি, যার কোনও কারণ বলতে পারি না । আমার গ্রামের অপরিচ্ছন্ন ঘর, অপরিচ্ছন্ন পথঘাট, ডোবা পুকুর, সমস্তগুলিই যেমন আমাদের মনের উপর একটা স্নেহের কুহেলিকা বিস্তার করে, তাদের ছবি যখন মনে ভেসে ওঠে তখন মনে হয় আনন্দ । তেমনি মধ্যে মধ্যে এমন অনেক লোকের সামনে আমরা আসি স্বল্পমাত্র পরিচয়ে যারা আমাদের হৃদয়কে আনন্দের ছায়ায় উদ্ভাসিত করে । ক্রমশঃ পরিচয়ের সঙ্গে যখন তাদের মধ্যে উদারতা বা মহত্ত্ব, বুদ্ধিপ্রাথর্য্য বা ত্যাগশীলতা প্রভৃতি সদগুণ আমরা দেখি, তখন নিষ্কারণে করে তারা আমাদের চিত্তকে আকর্ষণ । কিছু না করেও তারা আমাদের মনের উপর মুখ বর্ষণ করে, দুঃখের পীড়া করে হরণ । একটা অনির্ব্বচনীয় আনন্দে পূর্ণ করে তারা আমাদের মন, আমরা তার কোনও কারণ খুজে পাই না।