পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 অধ্যাপক থাকা যায় না । একবার মনে হ’ল, কানাইবাবুই ত আছেন, তিনি সব দেখবেন । আবার ভাবলে, এ তার মিথ্যা সাম্বনা—কানাইবাবুও যে ঐ রকমই আর একজন তপস্বী ; তিনি নিমগ্ন আছেন নিজের কাজে, তার কে খবর করে ঠিক নেই । এবার ফিরে গিয়ে তারও দেখাশোনার ভার তাকেই নিতে হবে । কানাই স্বীকার করে না বটে, কিন্তু সে দেখেছে যে সে যেদিন তার থাবার সময় কাছে গিয়ে দাড়িয়েছে, কাছে বসে গল্প করেছে, এট। ওটা এগিয়ে দিয়েছে, তার মুখ হয়ে উঠেছে প্রসন্ন। প্রত্যাশী বিড়াল সেদিন ফিরেছে উপবাসী হয়ে । তার মনে হ’ল যেন পুরুষজাতিটাই একান্ত অসহায়, নারীর কোমল হস্তের সেবা না পেলে বলিষ্ঠ এবং তপস্বী পুরুষও মনে মনে হয়ে যায় স্নান । প্রভাতের শিশিরবিন্দু পায় বলে’ই বনস্পতি পারে অখণ্ড মার্ত্তগুতাপ সহ্য করতে । আবার একথানা চিঠি এল কানাইয়ের কাছ থেকে । সেই চিঠিতে নানা কথার মধ্যে এক জায়গায় লেখা ছিল—“যে বিদ্যামন্দির তোমার জ্যোৎস্নাধারায় ছিল নিরন্তর অভিষিক্ত, আজ যেন সেখানে অমাবস্তার অন্ধকার ঘনিয়েছে, আমরা যেন কেউ কাউকে পারছি না চিনতে ’ স্বজাত একটু হেসে ভাবলে—ব্যাপার কি, কানাইবাবু যে কবি হয়ে উঠলেন । সে মনে মনে নিশ্চিত জানত যে চাটুবাক্যের লোক কানাই নয় । তার হৃদয়ে যেটি আসে, সহজ, সরল ও স্বচ্ছভাবে স্বনিদিষ্ট বাক্যে সেটিই পায় প্রকাশ । বিলাস বা বাহুল্যের কোনও অবকাশ নেই তার হৃদয়ে । ছলনা বা কল্পনার পরিচ্ছদ বঞ্চন করত না তার বাক্যকে । তাই কথায় কথায় ভাববিলাসের অভিভাষণ থেকে সে পেয়েছিল নিস্কৃতি । সেই কানাই আজ লিখেছে যে তার অদর্শনে আজ বিদ্যামন্দিরে নেমেছে অমাবস্তার ছায়া । কার মনে কি ছায়া