পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক 8& S সর্ব্বাঙ্গ । বাহ দৃষ্টিতে তাকে দেখা যায় না, তা টের পাওয়া যায় দুগ্ধের স্বাদে । কানাইয়ের কাছ থেকে যে চিঠিগুলি আসত তার অনেকগুলিতেই সে পেতে লাগল তার হৃদয়ের প্রতিধ্বনি । তার মন হয়ে উঠল উচাটন । এদিকে কিছুদিন ধরেই স্বকুমার ক্রমশঃ সুস্থ হয়ে উঠছিল। যখন সুকুমার ছিল অত্যন্ত , অসুস্থ তখন তার কাছে প্রায়ই যেতে হ’ত সুজাতাকে । বিস্বাদ পথ্য কি তিক্ত ঔষধ খাওয়াবার সময বা কোনও একটা ইনজেকৃশান দেওয়ার সময় মুকুমার আব্দার ধরত উণ্টো দিকে । তখন মুজাত কাছে না এলে প্রভার সাধ্য ছিল না মুকুমারকে ঔষধ বা পথ্য খাওয়ানো । কিন্তু ক্রমশঃই যত সে সুস্থ হয়ে উঠতে লাগল ততই সুজাত চাপাতে লাগল রোগীর সমস্ত ভার প্রভার উপর । সুজাতাকে পা ওয়ার জন্য মুকুমার ছটফট কবত কিন্তু সুজাতা এ বিষয়ে ছিল কঠোর । একান্ত প্রয়োজন না হ’লে সে কিছুতেই মুকুমারের ঘরে যেতে চাইত না । যখন বা যেত তখন সে ধমক দিয়ে উঠত মুকুমারকে, বলত লোভীপনা তোমাদের পুরুষজাতের একটা ধর্ম্ম । এই প্রচ্ছন্ন শ্লেষের ইঙ্গিতের মধ্যে যে সত্যটুকু ছিল, বিচক্ষণ স্বকুমারের তা বুঝতে দেরী হ’ত না, কাজেই তাকে স্নানমুখে চুপ করে থাকতে হত। প্রভার আড়ালে সুজাতা অনেক সময় মুকুমারকে তিরস্কার করে’ বলত— “প্রভার মত একটি মেয়ে তুমি কোথায় পাবে বল শুনি ? দিন নেই, রাত্রি নেই, বসে আছে তোমার শষ্যার পাশে । অক্লাস্ত পরিশ্রমে মুখে একটু দৈন্ত নেই, কেমন করে তোমার মুখে একটু হাসি ফোটাবে এই হচ্ছে চেষ্টা । তোমার সমস্ত জীবন দিয়েও এই ঋণ শোধ করতে পারবে না। প্রভা না এলে আমি কি পারতুম তোমার জন্য কিছু করতে, না আমি জানি ওর মত সেবা করতে ? এবার যে বেঁচে উঠলে সে প্রভারই স্নেহে, প্রভারই যত্নে ।”