পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক 86 ዓ অত্যন্ত অমৃতপ্ত স্বরে বল্লে—“মুজাতা, তুমি আমায় ক্ষমা কর, আমার জীবনট এ পর্য্যস্ত হয়েছে ভ্রম ও মোহের ইতিহাস । আমি যদি সেই সময় অত বড় একটা ভূল না করতুম, মঞ্জরীর লোভে অমন করে প্রলুব্ধ হয়ে না উঠতুম, তবে হয় ত আমার আজ এমন দুর্দশা হ’ত না । আমাকে মুক্তি দিতে কেবল তুমিই পার।" সুজাতা বল্লে—“তাই ত এসেছি আমি তোমাকে মুক্তি দিতে।” মুকুমার কিছুই বুঝতে না পেরে অথচ বেশ যেন একটু উৎসাহিত হয়ে বল্লে—“কি রকম ?” সুজাতা বল্লে—“মনে করে’ দেখ ছেলেবেলা থেকে আমরা বেড়ে উঠেছি একসঙ্গে । ছেলেবেলা থেকে পুরুষ বললে জানতুম যে সে শক্তপোক্ত, অসহায় মেয়েদের সে রক্ষা করে, সংসারের সব শক্ত কাজ সেই করে। সেই হিসাবে তোমাকেও জানতুম পুরুষ বলে । পুরুষের অন্য কোনও পরিচয় আমার জানা ছিল না । বয়স যখন বাড়তে লাগল, পা দিলুম যখন সতেরো আঠারোর কোঠায়, পড়লুম অনেক কাব্য-নাটক, অনেক রোম্যান্স, । সঙ্গীদের সঙ্গে কথাবার্ত্তায় যখন কাণে আসতে লাগল নানারকমের ইঙ্গিত তখন ধোয়াটে হয়ে উঠতে লাগল পুরুষ ও নারীগত একটা বিশেষ সম্বন্ধের কথা । তাতে অনেক সময় নিজের অলক্ষ্যে মন যে উত্তেজিত না হয়ে উঠত তা নয়, কিন্তু কেন যেন ও সব আমার কাছে মনে হ’ত ক্লিন্ন, সরে’ আসত মন ও সব চিস্তা থেকে অতি সহজে ৷ অথচ মনের মধ্যে কি যেন একটা আবেগ ফিরত ੀ খেয়ে । সে ঘূর্ণ যে কোনখান থেকে পথ পাবে তা আমার জানা ছিল না—সেইটিই ছিল আমার প্রধান দুঃখ ও প্রধান সম্পদ। তখন তুমি এসে দাড়ালে আমার সামনে, দিতে চাইলে একটা নূতন পরিচয়, একটা নূতন ইঞ্জিত ।