পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8br& অধ্যাপক নানাবর্ণে ঝলমল করা বেনারসী শাড়ী । ছুটে এসে দাড়াল সে সুজাতার সামনে । সুজাতা তখন সবে বৈকালিক কৃত্য সেরে বেরিয়ে এসেছে তাদের প্রাঙ্গণে । তার পরণে একখানা অতি সাধারণ শুভ্র বস্ত্র, তার পাড়ের বহর দেড় ইঞ্চির বেশী নয়। তবে তার মুখ আনন্দপূর্ণ, কিন্তু সে আনন্দের গভীরতা লক্ষ্য করতে পারে সেই ডুবুরী যে গভীর জলে ডুব দেয় মুক্তার সন্ধানে । তার সমস্ত অঙ্গই প্রায় নিরাভরণ, কেবল দু'হাতে দু’টি সোণার রুলি ; কাণে দুলছে দু’টি ছোট কর্ণাভরণ । সর্ব্ব অঙ্গে কোথাও কোন প্রসাধন নেই, যৌবনের কোন বিলাসবিলোল চেষ্টা নেই । দু’টি আয়ত চক্ষু, তা যেন এখনও মৃগশিশুর ন্যায় সরল । চক্ষু দু’টির মণি থেকে বেরিয়ে আসছে যে উজ্জ্বল আলোকশিখা, তার স্নিগ্ধতা ঠাকুরের আরতির দীপের ন্যায়— ধূপধূমাকুলিত বেদীর সমীপবর্ত্তী একটি দ্বীপশিখা যেন নিয়ত আবিষ্কার করতে চেষ্টা করছে ধূপের ধূমের কুঙ্কটিকার মধ্য দিয়ে অস্তরে প্রতিষ্ঠিত দেবীমূত্তি। সে আলো স্বর্য্যের আলোর ন্যায় দীপ্ত নয়, প্রথর নয়, বহুবর্ণের মধ্য দিয়ে করে না সে আপনাকে বিকীর্ণ । সে আলো যেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কোন গহবরের সম্মুখে, তার রশ্মিগুলি প্রবাহিত হচ্ছে গহবরের গুহাহিতকে নিরীক্ষণ করবার জন্য । সে আলো স্পন্দমান অভ্যন্তরের ধ্যানলোকের মধ্যে, নাগলোকের মণিরেখার স্থায় তা উজ্জ্বল ও শান্ত । সে আলো অধরাকে ধরবার জন্য । রাত্রির শেষ যামে পূর্ব্বদিম্বিভাগে যখন শুকতারা উদিত হয়ে স্থচিত করে দেয় তা'র পশ্চাৎপ্রবাহী অনাবিষ্কৃত আলোক রাশি, তেমনিই ছিল তার হাসিটুকু ৷ তা প্রকাশ করত তার অন্তরের স্নিগ্ধ আলোকচ্ছটা, প্রভার ঔজ্জল্যে নয়, ইঙ্গিতের গভীরতায় । সমস্ত দেহের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল গঙ্গোত্রীধাবিনী ভাগীরথীর পুণ্যবারিধারার সমৃদ্ধি, আবহন করে*