পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৫২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ৫২৩ স্বজাত বল্লে—“সাড়া এখন পরিণত হয়েছে ক্ষতে, যন্ত্রের তার হয়ে গিয়েছে বিশৃঙ্খল। আজ তুমি যে স্বরে তাকে বাজাতে চাও সে স্বরে সে বাজবে না ।” কানাই বল্লে—“কেন ?” সুজাতা বল্লে—“যে বর্ষণে কার্ত্তিকে বাড়ে হুৈমস্তিক ফসল, অগ্রহায়ণে সে তাকে করে বিশীর্ণ। যে জলরাশি শুক্তিকে করে পালন সেই তার অভ্যস্তরে প্রবেশ করে যদি পথ না পায় বের হয়ে যেতে, তবে সে হয়ে যায় মুক্তার ন্যায় কঠোর ” - কানাই রইল স্তব্ধ হয়ে । মুজাতা বল্লে—“আজ তোমার আমার পথ হয়েছে নির্দিষ্ট । এক তরীতে দিয়েছি দু’জনে ভাসান তুমি থাকবে হালের কাছে, আমি থাকব নৌকার ভিতরে । আমার কাছে তুমি এগিয়ে এলে নৌকা যাবে উণ্টে । তুমি আমি দু’জনে উঠেছি দূরারোহ শৈলে । পিচ্ছিল সে শৈলের গাত্র । প্রণয় ব্যাপারের অমুকুল নয় সে স্থান, দু’জনেই যাব পড়ে পা পিছলে অতল গহবরে । একটি কর্ম্মধারার মধ্যে আমাদের দু’টি চিত্ত ভেসে যাবে অকূল সমূদ্রের দিকে, ব্যক্তিগত মুখসম্ভোগের সেখানে কোন স্থান নেই। আজ আমার এ যন্ত্র তুমি আর বাজাতে পারবে না তার আদিম সুরে । হয় ত সে সুরের রয়েছে এখনো রেশ, কিন্তু সে হারিয়েছে তার আদিপ্রকাশের মহিমা। আজও আমরা দু’জনে মিলিত, কিন্তু কঙ্কণস্থত্রে নয় । এতে ক্ষোভ আছে, পরিতাপ আছে, কিন্তু এতে থাকবে না কোন ব্যর্থতা, থাকবে না কোন অহুশোচনা, কোন পরিদেবনা। আকাশের ধ্রুবতারা যেমন চেয়ে থাকে সপ্তর্ষির নয়নের দিকে তেমনি আমি চেয়ে থাকব তোমার দিকে । সে দৃষ্টিতে চিরকাল চলবে বিনিময়, কিন্তু লৌকিকভাবে কখনো হব না আমরা সংলগ্ন ।”