পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

էy o অধ্যাপক কিছু বোঝবার উপায় নেই। কিন্তু আমাকে আপনি ফাকি দিতে পারেন নি ।” স্বকুমার বল্লে—“বুকের ভাষা শোনবার কি কোনও বিশেষ যন্ত্র আছে নাকি আপনার কাছে ?” মঞ্জরী ঈষৎ হেসে বল্লে—“চোখ দিয়ে দেখা যায় রূপ, কাণ দিয়ে শোনা যায় কথা, জিহবায় পাওয়া যায় আস্বাদ, হাতে করি স্পর্শ, নাকে নিই গন্ধ, কিন্তু এ সমস্তই বাইরের জগতের । বুকের কথা বাইরের জগতের নয়, সে হচ্ছে অন্তলোকের আলোড়ন, তা ধরা পড়ে নিজের বুকের স্পন্দনে ৷” এই কথা বলে সে খপ করে সুকুমারের হাতখানি নিয়ে চেপে ধরলে নিজের বক্ষের উপরে। বল্লে—“দেখুন দেখি, এখানে কোনও স্পন্দন পান কি না, আর সে স্পন্দন আপনার বুকের স্পন্দনের সঙ্গে সাড়া দেয় কি না ।” মিনিটখানেক এইভাবে কাটল । সুকুমাব শুধু যে মঞ্জরীর বক্ষের স্পন্দনই অহুভব করল তা নয়, চতুগুণ অনুভব করল তার নিজের বক্ষের স্পন্দন, সমস্ত শরীরে অনুভব করল রক্তের দোলা, বোধ হতে লাগল যে কোমল বায়ুতরঙ্গের প্রশ্বাসে প্রশ্বাসে তার সমস্ত দেহখানা যেন সুদূর ব্যোমলোকে উত্থাপিত হচ্ছে। এক মুহূর্ত্তের মধ্যে যেন বিশ্ববিধাতার আদিযুগের মহা আদিমতম রহস্য রেখে গেল তার ইঙ্গিত তার ধমনীর রক্তধারার মধ্যে । উৎফুল্লমুখে মঞ্জরীর চোখের দিকে অতি দীনভাবে তাকিয়ে সুকুমার বল্লে—“আপনি আমার দরদ বোঝেন । যদি স্পৰ্দ্ধা না মনে করেন তবে আপনাকে বন্ধু বলে বরণ করে নিতে চাই ।” মঞ্জরীর মুখ শারদীয় উষার স্থলপদ্মের মত অরুণাভ হয়ে উঠল ।