পাতা:অনাথবন্ধু.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

snapsaur. unders aute-Marne প্রত্যেকবুদ্ধ পুর্ণজ্ঞান লাভ করেন সত্য, কিন্তু তিনি যে যুগে জন্মগ্রহণ করেন, সে যুগ লোকশিক্ষার উপযোগী নহে; সেই জন্য তিনি নিম্পাপ জীবন যাপন করিয়া অন্তে নির্বাণপ্রাপ্ত হন । যে সময় বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, সে সময় কোন প্রতোকবুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন না। যে যুগে বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, সেই যুগের নাম বুদ্ধোৎপাদ, আর যে সময় বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন না, সেই যুগের নাম অবুদ্ধোৎপাদ। কোন কোন যুগে কোন বুদ্ধ জন্মোন না, কোন কোন ঘুগে বুদ্ধগণ জন্মগ্রহণ করিয়া থাকেন। বর্তমান কল্পের নাম মহাভদ্রকল্প, কারণ এই কল্পে পাঁচ জন বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করিবেন। ঐ পাঁচ জনের মধ্যে কবুকুসন্দ, কোনগমন, কাশ্যপ ও গৌতম, এই চারি জন বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করিয়াছেন এবং বুদ্ধ মৈত্রেয় এখনও জন্মগ্রহণ করিবেন। বুদ্ধগণ ব্রাহ্মণ বা ক্ষত্রিয়বংশে জন্মগ্রহণ করিয়া থাকেন, কিন্তু কখনই বৈশ্যের বা শূদ্রের কুলে জন্মগ্রহণ করেন না। কাশ্যপ বুদ্ধ ব্রাহ্মণবংশে এবং গৌতমবুদ্ধ সূর্য্যবংশীয় ক্ষত্রিয়াকুলে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। কশ্যপ যে সময় জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, সেই সময় ব্রাহ্মণদিগেরই প্রাধান্য ছিল, গৌতম বুদ্ধ যে সময় জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, সেই সময় ক্ষত্রিয়গণই প্রধান ছিলেন । দশ পারমিত কি কি :-দান, শীল, নৈশ্রুম্য (নৈষ্কর্ম্ম্য ?), বীর্য্য, প্রজ্ঞা, সত্য, ক্ষান্তি, অধিষ্ঠান, মৈত্রী ও উপেক্ষা। প্রার্থকে আপনার সন্তানদান, এমন কি, স্ত্রী ও আত্মজীবনদামই দানের পরাকাষ্ঠী। ব্রাহ্মণযাজক যখন বোধিসত্ত্বের নিকট যাত্মা করেন, তখন বোধিসত্ত্ব র্তাহাকে তঁাহার দুইটি সন্তান দান করিয়াছিলেন। নিবিড় অরণ্যাণীমধ্যে যখন বেশন্তর 'বোধিসৱ তপশ্চরণ করিতেছিলেন, তখন ইন্দ্র ব্রাহ্মণের বেশধারণ পূর্বক তাহার নিকট যাঙ্কা করেন। তখন সেই সন্ন্যাসী যুবরাজ জিজ্ঞাসা করেন,-আপনি কি চাহেন ? ইন্দ্র সন্ন্যাসী-যুবরাজের পত্নীকে প্রার্থনা করেন। বেশন্তর বোধিসত্ত্ব ইন্দ্রের প্রার্থনা পুর্ণ করিলেন । নিকট কেহ কিছুর প্রার্থ হইলে তিনি কিছুতেই “না।” বলিবেন না। ধরার উদ্ধারসাধনের জন্য বোধিসত্ত্বকে এইরূপ আত্মত্যাগ করিতে হয়। সন্তানদানেই মেদিনীর মঙ্গলের জন্য গ্রীতির পরাকাষ্ঠা সুচিত হয়। আজ খৃষ্টানরা বলেন শুনিতে পাই, ঈশ্বর পৃথিবীকে এত ভালবাসেন যে, তিনি ধরাবাসীর ত্রাণের জন্য র্তাহার একমাত্র পুত্রকে দান করিয়াছেন। ইহা দানাপারমিতার প্রতিধ্বনিমাত্র। বোধিসত্ত্বকে নৈতিক জীবন চরমোন্নত করিতে হয়। র্তাহাকে সর্ব্বভূতে দয়াপ্রদর্শন করিতে হয়, সর্ব্বথা অসাধুত্ব পরিহার করিতে হয় এবং লোকেয় নিন্দনীয় সর্ব্বকার্য্য বর্জন করিতে হয়। তিনি কোমরূপ নিন্দনীয় বা গৌরবের হানিকর কার্য গোপনেও করেন না। তিন কারণে বোধিসত্ত্ব কুক্রিয়া হইতে বিয়ষ্ণু হইয়া থাকেন। প্রথমত:—তিনি মনে করেন যে, এমন আর্টস্ক ব্রাহ্মণ ও শ্রমণ আছেন, র্যাহারা অন্যের অনাথবন্ধু। বোধিসত্ত্বের ১ [ थथम वई, थांबन, s०२०। Anssy ܒ ܒ মনের ভাব জানিতে পারেন এবং দৈব্যদৃষ্টিপ্রভাবে সকল বিষয় সনদর্শন করিতে সমর্থ হন ; তাহারা তঁহার কুকার্য্য দেখিতে পাইবেন । দ্বিতীয়তঃ-দেবতারা তাহার কার্য্য দেখিতে পাইবেন, সুতরাং তিনি কুকর্ম্ম হইতে বিরত হন। তৃতীয়তঃ-তিনি মনে করেন, ব্রাহ্মণ ও শ্রমণগণ র্তাহার কার্য্যাবলী দেখুন। আর নাই দেখুন, তাহার বিবেকবুদ্ধি যখন । তঁহাকে কুক্রিয়ায় লিপ্ত হইতে নিষেধ করিতেছে, তখন র্তাহার। আপনার বুদ্ধি অনুসারে তিনি গোপনেও কুকার্য্য করেন না । নৈক্সক্ষমা (নৈষ্কর্ম্ম্য ?) অর্থে আধ্যাত্মিক উন্নতির পরিপহী সর্ব্বপ্রকার ইন্দ্রিয়জভোগের বাসনা পরিত্যাগ। বীর্য্য অর্থে অভীন্সিত উদ্দেশ্যসাধনের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা । অবিলম্বে সৎকার্য্য করিতে তিনি কিছুতে পশ্চাদপদ হন না । তিনি আপনার জীবন বিপন্ন হইলে তাহাতে ভ্রক্ষেপ না করিয়া অন্যের জীবনরক্ষার্থ বিপদসাগরে ঝাম্পপ্রদান করেন। অনুসন্ধান, অধ্যয়ন ও সাধুসঙ্গ দ্বারা তিনি জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি সত্যকথা বলেন, সত্য আচরণ করেন, প্রাণান্তেও মিথ্যাকথা বলেন না। তিনি ক্ষমাপূর্ণ ধৈর্য্যের সাধনা করেন ; যদি কেহ তঁহার দেহ খণ্ড খণ্ড করিয়া কাটে, তাহা হইলেও তিনি আততায়ীর উপর ক্রুদ্ধ হন না। যে বোধিসত্ত্ব ব্রাহ্মণকুলে জন্মিয় বারাণসীর সন্নিহিত মৃগদাবে তপস্যা করিতেছিলেন, তাহার পক্ষে ঐরূপই হইয়াছিল। যত দিন। তঁহার অভিপ্রায় সিদ্ধ না হয়, তত দিন তিনি কিছুতেই তাঙ্গার কর্ত্তবাপথ হইতে বিচলিত বা পরিভ্রষ্ট হন না । যন্ত্রণা, কষ্ট, নির্য্যাতন, উৎপীড়ন, এমন কি, অবিলম্বে শিরশেছদের আজ্ঞাও তেঁাহাকে তাহার সাধনমাৰ্গ হইতে পরিভ্রষ্ট করিতে পারে না । জননী যেমন পুলকে স্নেহ করেন, তিনি তেমনই সকলকে স্নেহ করেন ; যে আততায়ী তাহার প্রাণনাশের জন্য সম্মুখে উপস্থিত, . তাহাকেও তিনি ক্রোধ বা কোন প্রকার বিদ্বেষ প্রদৰ্শন করেন না। তিনি শত্রু, মিত্র, সকলকেই সমান ভালবাসেন। বোধিসত্ত্বগণ জন্মজন্মান্তর ধরিয়া ঐ দশটি ধর্ম্ম পালন করিয়া থাকেন, এই প্রকারে ক্রমে তাহাদিগের সিদ্ধিলাভ হয়। জাতকের গল্পে বোধিসত্ত্বদিগের কঠোর পরীক্ষার কথা বিবৃত আছে। রায়সাহেব শ্রীযুত ঈশানচন্দ্র ঘোষ “জাতক” বাঙ্গালা ভাষায় অনূদিত করিতেছেন। বোধিসত্ত্বগণ পৃথিবীর লোককে কত ভালবাসেন, জাতিক পাঠ করিলে তাহা উপলব্ধি করা যায়। কথিত আছে যে, স্বৰ্গে যদি কোন বোধিসত্ত্ব জন্মগ্রহণ করেন, তাহা হইলে তিনি দিব্য অবস্থায় কত দিন অবস্থান করিবেন, তাহা দেখেন । যদি তিনি দেখেন যে, তঁাহাকে দীর্ঘকাল স্বৰ্গভোগ করিতে হইৰে, তাহা হইলে তিনি স্বেচ্ছায় স্বৰ্গসুখ পরিত্যাগপূর্বক মর্ত্যে মনুষ্যদিগের জন্য দুঃখ ভোগ করিতে আসেন। জননী যেমন তাহার সহায়হীন শিশুসন্তানকে ভালবাসেন, বোধিসত্ব সেইরূপ সমস্ত পৃথিবীর জীবকুলকে ভালবালেন। পৃথিবীর