পাতা:অনাথ আশ্রম - ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ.pdf/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জিজ্ঞান্সিলেন, “প্রিয় কানু।” কানু ধেনী ট্যাঙ রার মত তিড়বিড় করিয়া হাত টানিয়া বলিল । নিরঞ্জন। কেন, তোর হইল কি ? কাননিকা। আমার কিছু হয় নাই ! / ! নিরঞ্জন আর নাতিনীকে রহস্য করিলেন না। রিপোর্ট পড়িয়া তাহার হৃদয়ে শূেল বিঁধিতেছিল । কর্ত্তব্যের অনুরোধে গুরুগম্ভীর স্বরে বলিলেন, “তোর নিশ্চয় কিছু হইয়াছে। তা নহিলে কেন তুই বালসুলভ চাপল্য ছাড়িয়া প্রবীণার মত গম্ভীরা হইতেছিস্ ! আর তোর রহস্য ভাল লাগে না, পাঁচ জনের সহিত মিশিতে । f হাত ধরিয়া সোহাগকম্পিত ভাষে আবার | সাধ যায় না, পড়িতে রুচি হয় না। -ভাল কথা, ইংরাজী পড়িতে তোর আবার অনিচ্ছা জন্মিল | Ččნის কাননিকার মুখেও চঞ্চল হাঁসির পরিবর্তে গাম্ভীর্যের একটা স্থায়ী আবরণ আসিয়া পড়িল । মাতামহের কথার ভাবে বুঝিল, স্কুল হইতে রিপোর্ট আসিয়াছে।-জিজ্ঞাসা করিল, “রিপোর্ট পড়িয়াছ ?” । নিরঞ্জন। তবে কি ভূতের কাছে শুনিলাম। কাননিকা। যাহা শুনিয়াছ, সমুদয় সত্য ; ; ইহার একবর্ণও মিথ্যা নয়। আমি ইংরাজী পড়িব না। বল দেখি, ‘ব্যাচিলরের” ফেমিনাইন’ । কি ? “মেড' নয় ? তবে পুরুষে যে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্যাচিলার অব আর্টস’ হয়, অর্থাৎ পুরুষে যখন বি, এ, হইবে, স্ত্রীলোকে তখন এম, এ, হইবে না কেন ? : যে ভাষায় মিথ্যার প্রশ্রয়, সে ভাষা আমি আর পড়িব না। । কাননিকার কথা শুনিয়া নিরঞ্জনের চক্ষু | কপালে উঠিয়া গেল, মুখ বিরাট হাঁ করিল, ” “ইয়েন্স ইয়েস!” বাঁধান দাঁত ঝরিয়া পড়িল। সত্যইত কানু এম, । এ না হইয়া বিএ হইল কেন ? ) কাননিকা দাদার উত্তরের অপেক্ষা করিল । রাশি সমীরণ কাননিকার ভয়ে দাদামহাশয়ের : হৃদয়-প্রকোষ্ঠে লুকাইয়াছিল, যেই কাননিকা । চক্ষের অন্তরাল হইল, অমনি হুস করিয়া পলা- ৷ ইয়া, মরুৎসখাগণকে সংবাদ দিল। সমীরণ " রাত্রের ব্যাপার খানা কি, মীমাংসা করিবার জন্য কোলাহল আরম্ভ করিল! পোর্ট কমিশনার সাইক্লোন চলিয়াছে। । | নিরঞ্জনের হৃদয়ে কিন্তু আগুণ জ্বলিল । নিরঞ্জনকে ক্ষার করিবার জন্য সেই অনলকে দ্বিগুণ জ্বালাইতে চারি দিক হইতে ফুৎকার { আসিল । ভামিনী আসিয়া । বলিল,-“বাবা বাবু, সে দিনকার কবিতা কাননি করিয়াছে। । ক্রৌঞ্চের মৃত্যু দেখিয়া কে এক বাল্মীকী মুনি নাকি কবিতা আওড়াইয়াছিল, কাননীও কপোতের মৃত্যু দেখিয়া তাই করিয়াছে!” । নিরঞ্জন আর একটিও কথা কহিলেন না। কেবল “হুম্মা’ বলিয়া আর একটি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। ভামিনী বাবা বাবুর ভাব টিপিয়া পলাইয়া গেল । নিরঞ্জন মনে মনে ভাবিলেন, “হয় ত কাননিকা আর কোথাও শুনিয়া শিখিয়াছে।-- নহে কি এই অসম্ভব ব্যাপার নাস্তিক নিরঞ্জন । বিশ্বাস করবে ?—” । । বাতায়নপথে বেগে সমীরণ প্রবিষ্ট হইয়া । বলিল “হাঁ হাঁ!” দেয়ালে টিকটিকি বলিল, “ঠিক ঠিক ?” পদঘর্ষণ-মুখরিতা গালিচা৷ বলিল, দেখিয়া আর কিছু বলিল না। পা টিপিয়া পা !', r · · · - ‛ ( • r ・ 。 . . . . .