পাতা:অনুবর্তন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবর্ত্তন እb”S বহু বেলফল দেয়। বহু অপচয়ের হিসেব কষেই এই পুষ্টির ইজিনিয়ারিং দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। ভগবান। তার মধ্যেই অপচয়ের সার্থকতা। স্কুলের সব ছেলে কি মানুষ হয় ? একটা স্কুল থেকে যাট বছরে স্কুটো-একটা মাজৰ বার হোলেও স্কুলের অস্তিত্ব সার্থক । এই ভেবেই আনন্দ পাই নারাণ । প্রত্যেক শিক্ষক, যিনি শিক্ষক নামের যোগ্য-এই ভেবেই তার আনন্দ ও উৎসাহ । দেশের সেবায় সব চেয়ে বড় অর্ঘ্য তারা যোগান-মানুষ । জ্যোতিবিনোদ নারাণবাবুর সামনে বিড়ি খান না। আড়ালে দাড়াইয়া ধূমপান শেষ করিয়া ছাদের এধারে আসিয়া বলিলেন--দাদা, এখনও খান নি ? রাত অনেক হয়েছে। --না, খাবো না, শরীরটা আজ তেমন ভাল নেই--কি হয়েছে দাদা ? দেখি, হাত দেখি ? তাই তো, আপনার যে জর । হয়েছে। ছাদে ঠাণ্ডা লাগিয়ে বেড়াবেন না, বেশ গা গরম। চলুন, নীচে দিয়ে আসি । w বসে বসে। ও একটু আধটু গা-গরমে কিছু আসবে যাকে নাআকাশের নক্ষত্র চেন ? তুমি তো জ্যোতিষ নিয়ে ব্যবসা করে । এষ্ট্রনমি জানো ? ওই যে এক একটা নক্ষত্র দেখিছে-এক একটা সূর্য্য । আমি যদি বলি, এই পৃথিবীর মত বহু হাজার পৃথিবী ওই সব নক্ষত্রের মধ্যে আছে-তা হোলে তুমি কি তার প্রতিবাদ করতে পারো ? -আজো না দাদা, প্রতিবাদ তো দূরের কথা—আমি কথাটা বলবো না --আপনি যত ইচ্ছে বলে যান। যখন ও নিয়ে কখনো মাথা ঘামাই নিআপনি যেমন জ্যোতিষ আলোচনা করেন নি কখনো-বলেন, ও সব মিথ্যে । -মিথ্যে বলিনে, আনসায়েন্টিফিক বলি। -ওই একই কথা দাদা । দু পয়সা করে খাই-কাজেই বিশ্বাস করি । নারাণবাবু ঘরে আসিয়া শুইয়া পড়িলেন। রাত্রে ভয়ানক পিপাসা, সমস্ত গায়ে ব্যথা । ঘুমের ঘোরে। আর জরের ঘোরে কত কি অস্পষ্ট স্বপ্ন দেখিলেন-চুনির মুখ, তার ছেলে নাই, কেহ কোথাও নাই।-কেন, এত ছাত্র আছে—চুনি আছে--শিয়রে চুনি বসিয়া তাহার সেবা করিতেছে।