পাতা:অনুবর্তন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবর্তন ܦܘ গেলেন। বাড়ী তালাবদ্ধ। মেয়েছেলে নাই, ভাবে মনে হইল। পুরুষেরা যদি বা থাকে, কর্ম্মস্থল হইতে সকাল সকাল ফিরিবার তাগিদ নাই। ক্ষেত্রবাবু অন্যমনস্কভাবে পথ চলিতে লাগিলেন । ধর্ম্মতলার কাছাকাছি আসিলে একটি তরুণ যুবক আসিয়া খপ করিয়া তাহার পায়ের উপর পাড়িয়া ধূলা লইয়া প্রণাম করিয়া হাসিমুখে বলিল-দস্তার, ভাল আছেন ? চিনতে পারেন ? -হ্যা, রাজেন দেখছি ষে। তা আর চিনতে পারবো না। তুই কাদের সঙ্গে যেন পাশ করিস-কোন বছর --বছর পাঁচ ছয় হয়ে গেল স্যার । মনে রেখেছেন, এই যথেষ্ট । আমি শিবুদের ব্যাচে পাশ করি। শিবুকে মনে আছে ? শিবনাথ ভট্টচাজি, ক্ষীরোদ ডাক্তারের ছেলে ক্ষেত্রবাবু ভাল মনে করিতে পারিলেন না, কিন্তু বলিলেন-হ্যা, মনে পড়েছে। কি করছিস ? --এ. আর. পি-তে ঢুকেছি হস্তার। বেকার বসে ছিলাম আজ অনেকদিন । এবার --বেশ, বেশ । আচ্ছা, চলিসন্ধ্যার দেরি নাই। আবার সেই ব্ল্যাক-আউটের কলিকাতা । আর কলিকাতায় থাকিয়া লাভ নাই । রাত সাড়ে আটটায় গাড়ী আছে। শিয়ালদহে। ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু সস্তার বিস্কুট ও লেবেস্তুস কিনিয়া সন্ধ্যার পুর্বেই ক্ষেত্রবাবুটেশনে আসিয়া জমিলেন। যদুবাৰু আজি মাস দুই শয্যাগত । হাওড়া জেলার যে পল্লীগ্রামে তিনি গিয়াছিলেন, সেখানে গিয়া দেখিলেন, ভগ্নাপতির ঘরবাড়ীর অবস্থা যা, তাতে সেখানে মানুষের বাস করা চলে না । তবুও থাকিতে হইল, কি করিবেন-অভাব। কিন্তু মাসখানেক পরে বন্ধুবাবুর ম্যালেরিয়া ধরিল। অর্থের অভাব, তদুপরি থাকিবার কষ্ট-এ। গ্রামে আত্মীয় বন্ধু কেহ নাই, হাতেও নাই পয়সা ।