পাতা:অনুসন্ধান - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চ্যালারাম

তৃষ্ণায় আর ঠাসাঠাসিতে তাদের কি কষ্ট! একেবারে নেতিয়ে পড়লো গাড়ির মধ্যে। আমানুল্লা নেমে এসে লরিতে ড্রাইভারের পাশে বসলেন। সৌভাগ্যক্রমে ঘণ্টাদুইয়ের মধ্যে কালাত থেকে করাচীগামী ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্টের ডাক মোটরের সঙ্গে আমাদের দেখা হোল। ডাক পাহারা দেবার জন্যে সঙ্গে একখানা সাঁজোয়া গাড়ি, কারণ ঐ সময়টা বেলুচ দস্যুদের বড় উৎপাত চলছিল মরুভূমির পথে। একদিনে চামান, পরদিন দুপুরে করাচী। ঠিক হোল সেখান থেকে ট্রেনে রাজা রানী বম্বেতে যাবেন। আমরা ফিরলাম সেইদিনেই কাবুলে। জনপিছু দুশো টাকা বকসিস মিললো, গাড়িভাড়া ও তেলের দাম বাদে। বিদায় নেবার সময় আমানুল্লা আমাদের প্রত্যেকের করমর্দন করলেন। বললেন—যদি কখনও ফিরি, তোমাদের ভুলবো না। চেয়ে দেখি রানীমার চোখে জল। আমাদেরও কারো চোখ সে সময় শুষ্ক ছিল না, বোধহয় কঠোর প্রাণ দুধর্ষ জাঠ পূরণমলেরও না—নইলে সে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়েছিল কেন?


৭৪