পাতা:অন্‌ দি ভল্‌গা.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ দি ভলগা নিজের অবস্থাটাকে আমার নিতান্তই দুর্ভাগ্য বলে মনে হয়েছিল। কেমন করে কি যে ঘটল কিছুই বুঝতে পারলাম না। ভবিষ্যতের কথা কল্পনা করে কেবলই ভয় হচ্ছিল। গৃহহীন হয়ে যে বাড়ীটাতে আশ্রয় নিয়েছি সেখানে রাশি রাশি চুন আর সুরকি স্তুপীকৃত হয়ে আছে। বাড়ীটার সংস্কারের কাজ তখনও শেষ হয় নি। এই অসহায় অবস্থার মধ্যে একটা নূতন অতিথিকে জগতে টেনে এনে আমি কি করব? কথাটা চিন্তা করার পরেই,আজের দিনে যা অনেকেরই করা উচিত, তাই করাই স্থির করে ফেললাম•••হা, তাই করব বলেই উঠে পড়লাম। দু’হাতের তালু দিয়ে অনেকক্ষণ মাথাটাকে চেপে ধরে দাড়িয়ে রইলাম। তারপর বেরিয়ে পড়লাম পথে••• সবেমাত্র রাস্তায় জল ছিটানাে হয়েছে। খানিকক্ষণের জন্য বেশ একটা ঝরঝরে সজীব ভাব জেগে উঠেছে সেখানে। পাথর বাঁধানাে রাস্তার বুকে অগণিত ব্যস্ত মানুষের ভিড়। ভিজে রাস্তার স্পর্শে মানুষগুলাের মুখে চোখেও উৎসাহ ও সজীবতার দীপ্তি ফুটে উঠেছে। তাদের সবাই নিজ নিজ চিন্তায় মগ্ন হলেও সবাই মিলে একটা অবিচ্ছিন্ন জনস্রোতের সৃষ্টি করেছে। সেই বিপুল জনস্রোতের অংশী হয়েও এক অদ্ভুত অনুভূতি নিয়ে আমি পথ চলছিলাম। আমার বেঁচে থাকার আর কোন অধিকারই যেন আর মনে হচ্ছিল যে উদ্দেশ্য নিয়ে পথ চলছি তা যেন অনুমানে সবাই বুঝে নিয়েছে। সুতরাং প্রভাতের সজীবতার স্পর্শে জীবনের অস্তিত্বে সবাই যখন খুশিতে ভরপুর তখন নিজের লজ্জাকর অস্তিত্বে আমি অসহ বেদনা অনুভব করছিলাম। পথ চলতে চলতে চোর চাউনিতে তাই রাস্তার দুধারে দরজার পাশে সংলগ্ন নাম ফলকগুলােকে বিশ্লেষণ করতে শুরু করলাম। আমার যেন ভয়ানক রকম কোন অসুখ করেছে। মনে হচ্ছিল আমি যেন সমাজ বিতাড়িত, সবার কাছে অবহেলিত, ঘণ্য। নেই।