পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

砷 R গেল । সবজিয়া ভাবে নাই যে, ছেলে সত্যসত্যই তাহার কথা ঠেলিয়া না খাইয়া স্কুলে চলিয়া যাইবে । যখন সত্যই বঝিতে পারিল, তখন তাহার চোখের জল আর বাধা মানিল না। ইহা সে আশা করে নাই। অপ, স্কুলে পৌঁছতেই হেডমাস্টার ফণীবাব, তাহাকে নিজের ঘরে ডাক দিলেন ,ফণীবাবার ঘরেই স্থানীয় ব্রাঞ্চ পোস্ট-অফিস, ফণীবাবই পোস্ট-মাস্টার । তিনি তখন ডাকঘরের কাজ করিতেছিলেন । বলিলেন, এসো অপােব, তোমার নম্বর দেখবে ? আজি ইন্সপেক্টর অফিস থেকে পাঠিয়ে দিয়ুেচ-বোডের এগাজামিনে তুমি জেলার মধ্যে প্রথম হয়েচ-পাঁচ টাকার একটা প। পাবে। যদি আরো পড়ে। তবে । পড়বে তো ? এই সময় তৃতীয় পন্ডিত মহাশয় ঘরে ঢুকিলেন। ফণীবাব বললেন, ওকে সে কথা এখন বললাম পন্ডিতমশাই । জিজ্ঞেস করাচি আরও পড়বে তো ? তৃতীয় পড়িত বলিলেন, পড়বে না, বাঃ ! হীরের টুকরো ছেলে, স্কুলের নাম বেখেছে ! ওরা যদি না পড়ে তো পড়বে কে, কেন্সট তেলির বেটা গোবধােন ? কিচ্ছ না, আপনি ইন্সপেক্টর অফিসে লিখে দিন যে, ও হাই স্কুলে পড়বে । ওর আবার জিজ্ঞেসটা কি ?-ওঃ, সোজা পরিশ্রম করাচি মশাই ওকে ভগ্নাংশটা শেখাতে ? প্রথমটা অপ যেন ভাল করিয়া কথাটা বঝিতে পারিল না। পরে যখন বঝিল তখন তাহার মাখে কথা যোগাইল না। হেডমাস্টার একখানা কাগজ বাহির করিয়া তাহার সামনে ধরিয়া বললেন---এইখানে একটা নাম সই ক'রে দাও তো। আমি কিন্তু লিখে দিলাম যে, তুমি হাই স্কুলে পড়বে । আজই ইন্সপেক্টর অফিসে পাঠিয়ে দেবো ; সকাল সকাল ছটি লইয়া বাড়ি ফিরিবার পথে মায়ের কারণ মাখােচ্ছবি বার বার তােহর মনে আসিতে লাগিল। পথের পাশে দাপরের রৌদ্র-ভরা শ্যামল মাঠ, প্রাচীন তুতি বটগাছের ছায়া, ঘন শালপত্রের অন্তরালে ঘাঘর উদাস কন্ঠ, সব যেন করণ হইয়া উঠিল। তাহার মনে এই অপব করণ ভাবটি বড় গভীর ছাপ রাখিয়া গিয়াছিল। আজিকার দােপােরটির কথা উত্তর জীবনে বড় মনে আসিত তাহার । ক’ত-কতদিন পরে আবার এই শ্যামচ্ছায়ােভরা বীথি, বাল্যের অপরাপ জীবনানন্দ, ঘাঘর ডাক, মায়ের মনের একদিনের দঃখাঁটি-অনন্থের মণিহারে গাঁথা দানাগলির একটি, পশ্চিম দিগন্তে প্রতি সন্ধ্যায় ছিড়িয়া-পড়া, বহবিস্মত মক্তাবলীর মধ্যে কেমন করিয়া অক্ষয় হইয়া ছিল । বাড়িতে তাহার মাও আজ সারাদিন খায় নাই । ভাত চাহিয়া না পাইয়া ছেলে না খাইয়াই চলিয়া গিয়াছে স্কুলে-সবজিয়া কি করিয়া খুবোরের কাছে বসে? কুলাইচণ্ডীর ফলার খাইয়া অপ, বৈকালে বেড়াইতে গেল । গ্রামের বাহিরে ধক্ষেক্ষেতের ফসল কাটিয়া লওয়া হইয়াছে । চারি ধারে খোলা মাঠ পড়িয়া আছে। আবার সেই সব রঙীন কলপনম ; সে পরীক্ষায় বৃত্তি পাইয়াছে ! তার সাবপ্নের অতীত ! মোটে এক বছর পড়িয়াই বত্তি পাইল ।*** সমাখের জীবনের কত ছবিই আবার মনে আসে। ঐ মাঠের পারে রক্ত আকাশটার