পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6380 অপরাজিত বাধাহীন হউক। •• অপ, তাহাদুঃ ঘাটের ধারে আসিল। ওইখানটিতে এমন এক সন্ধ্যার অন্ধকারে বনদেবী বিশালার্থী সম্বরপ চক্রবর্তীকে দেখা দিয়াছিলেন কতকাল আগে। আজ যদি আবার তাহাকে দেখা দেন ! --তুমি কে ? -আমি আপ । --তুমি বড় ভাল ছেলে। তুমি কি বর চাও? -অন্য কিছই চাই নে, এ গাঁয়ের বনঝোপ, নদী, মাঠ, বশিবাগানের ছায়ায় অবোধ, উদগ্রীব, সর্বপ্নময় আমার সেই যে দশ বৎসর বয়সের শৈশবটি-তাকে আর একটিবার ফিরিয়ে দেবে দেবী ?-- "You enter it by the Ancient way Through Ivory Gate and Golden" ঠিক দােপর বেলা । রানী কাজলকে আটকাইয়া রাখিতে পারে না-বেজায় চঞ্চল। এই আছে, কোথা দিয়া যে কখন বাহির হইয়া গিয়াছে - কেহ বলিতে পারে না । সে রোজ জিজ্ঞাসা করে---পিসিমা, বাবা কবে আসবে ? কতদিন দেরি হবে ?-- অপৰ যাইবার সময় বলিয়া গিয়াছিল -- রাণাদি, খোকাকে তোমার হাতে দিয়ে যাচ্ছি, ওকে এখানে রাখবে, ওকে ব’লো না। আমি কোথা যাচ্ছি। যদি আমার জন্য কদে, ভুলিয়ে রেখো।--তুমি ছাড়া ও-কাজ আর কেউ পারবে না। রাণ চোখ মাছিয়া বলিয়াছিল - ওকে এরকম ফাঁকি দিতে তোর মন সরছে ? বোকা ছেলে তাই বঝিয়ে গেলি-যদি চালাক হ’ত ? অপ বলিয়াছিল, দেখ আর একটা কথা বলি । ওই বাঁশবনের জায়গাটাতোমায় চল দেখিয়ে রাখি- একটা সোনার কোঁটো মাটিতে পোঁতা আছে আজ। অনেকদিন-মাটি খড়লেই পাবে । আর যদি না ফিরি। আর খোকা যদি বাঁচে--- বোমাকে কোটোটা দিও সিদর রাখতে । খোকাও কন্টে পেয়ে মানষ হোক -এত তাড়াতাড়ি স্কুলে ভর্তি করবার দরকার নেই। যেখানে যায় যেতে দিও --কেবল যখন ঘাটে যাবে, তুমি নিজে নাইতে নিয়ে যেও - সাঁতার জানে না, ছেলেমানষে ডুবে যাবে । ও একটু ভীতু আছে, কিন্তু সে ভয় এ নেই তা নেই বলে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা ক’রো না-কি আছে কি নেই তা বলতে কেউ পারে না। রাণাদি । কোনোদিকেই গোঁড়ামি ভাল নয়। --তা। ওর ওপর চাপাতে যাওয়ারও দরকার নেই । যা বোঝে বাবােক, সেই ভাল । অপ, জানিত, কাজলশােধ, তার কল্পনা-প্রবণতার জন্য ভীত । এই কাল্পনিক ভয় সকল আনন্দ রোমান্স ও অজানা কলপনার উৎস-মািখ । মক্ত প্রকৃতির তলায় খোকার মনের সব বৈকাল ও রাত্রিগলি অপােব রহস্যে রঙীন হইয়া উঠুক-মনেপ্রাণে এই তাহার আশীবাদ ।