পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bf অপরাজিত -এই ! সি সি বি এক্ষনি বাকে উঠবে-তোর দিকে তাকাচ্ছে, সামনে চাરેિ ! আঃ-কতক্ষণে সি, সি, বি-র এই বাজে বকুনি শেষ হইযে!-বাহিরে গিয়া সকলকে চিঠিখানা দেখাইতে পারিলে যে সে বাঁচে :- ছেলেটিকেও খাজিয়া বাহির করিতে হইবে । R ছটির পর গেটের কাছেই ছেলেটির সঙ্গে দেখা হইল। বোধ হয় সে তাঁহারই অপেক্ষায় দাঁড়াইয়াছিল। কলেজের মধ্যে এইরূপ একজন মাগধ ভক্ত পাইয়া অপ মনে মনে গর্ব অনভ্যর্ঘ করিয়াছিল বটে, কিন্তু সেই তাহার পরাতন মািখচোরা রোগ ! তবে তাহার পক্ষে একটু সাহসের বিষয় এই দাঁড়াইল যে, ছেলেটি তাহার অপেক্ষাও লাজক। অপ, গিয়া তাহার সম্মখে দাঁড়াইয়া কিছুক্ষণ ইতস্ততঃ করিয়া তাহার হাত ধরিল। কিছুক্ষণ কথাবাত হইল। কেহই কাগজে লেখা পদ্যাটার কোনও উল্লেখ করল না, যদিও দহজনেই বঝিল যে, তাহদের আলাপের মলে কালকের সেই চিঠিখানা। কিছুক্ষণ পর ছেলেটি বলিল,-চলন কোথাও বেড়াতে যাই, কলকাতার বাইরে কোথাও মাঠে-শহরের মধ্যে হাঁপ ধরে- কোথাও একটা ঘাস দেখবার জো নেই কথাটা শনিয়াই অপর মনে হইল, এ ছেলেটি তৈা সম্পণ অন্য প্রকৃতির। ঘাস না দেখিয়া কমন্ট হয় এমন কথা শুতা আজ প্রায় এক বৎসর কলিকাতার অভিজ্ঞতায় কলেজের কোন বন্ধর মাখে শোনে নাই । সাউথ সেকশনের টেনে গোটাচারেক স্টেশন পরে তােহাৱা নামিল । অপ কখনও এদিকে আসে নাই । ফাঁকা মাঠ, কেয়া ঝোপ, মাঝে মাঝে হোগলা বন । সর মেঠো পথ ধরিয়া দজনে হটিয়া চলিতেছিল-টেনের অলপ আধঘণ্টার আলাপেই দ’জনের মধ্যে একটা নিবিড় পরিচয় জমিয়া উঠিল। মাঠের মধ্যে একটা গাছের তলায় ঘাসের উপরে দািজনে গিয়া বসিল । ছেলেটি নিজের ইতিহাস বলতেছিলহাজারিবাগ জেলায় তাহদের এক অভ্রের খনি ছিল, ছেলেবেলায় সে সেখানেই মানষে ; জায়গাটার নাম বড়বনী, চান্নিধারে পাহাড় আর শাল-পলাশের বন, কিছু দরে দারকেশ্লােবর নদী ! নিকটে পাহাড়ের গায়ে একটা কণা । ‘পড়ন্ত বেলায় শালবনের পিছনের আকাশটা কত কি রঙে রঞ্জিত হইত-প্রথম বৈশাখে। শাল-কুসীমের ঘন সগন্ধি দােপরে রৌদ্রকে মাতাইত, পলাশবনে বসন্তেয় দিনে যেন ডালে ডালে আরতির পঞ্চপ্রদীপ জবলিত-সন্ধ্যার পরই অন্ধকারে গা ঢাকিয়া বাঘেরা আসিত ঝণার জল পান করিতে-বাংলো হইতে একটু দরে বালির উপর কতদিন সকালে বড় বড় বাঘের পায়ের থাবার দাগ দেখা গিয়াছে । সেখানকার জ্যোৎস্না রাত্রি ! সে রাত্রির বণনা নাই, ভাষা যোগায় না। সবগ মেন দরের নৈশকুয়াশাচ্ছন্ন অস্পষ্ট পাহাড়শ্রেণীর ওপারে-ছায়াহীন, সীমাহীন, অনন্তরস-ক্ষরা জ্যোৎস্না যেন নিকচক্রবালে তাহারই ইঙ্গিত দিত। এক-আধাদিন নয়, শৈশবের দশ-দশটি বৎসর সেখানে কাটিয়াছে । সে অন্য জগৎ, পথিবীর মন্ত প্রসারতার রােপ সেখানে চোখে কি মায়া-অঞ্জন মাখাইয়া