পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১০০

আসে। আরও সব ছেলেমেয়েরা আসিল, খেলা আরম্ভ হইয়া গেল, ক্রমে বেশ বেলা হইল-কিন্তু অমলার দেখা নাই। বাড়ীর ভিতর হইতে বধু খাবার খাইবার জন্য ডাকিয়া পাঠাইল-রোজ সকালে বিকালে বধু নিজের হাতে খাবার তৈয়ারী করিয়া তাহাকে খাওয়াইত, খাওয়া শেষ করিয়া আসিবার সময় সে বধূকে জিজ্ঞাসা করিলা-সকালে কি অমলাদিদি এসেছিল ? না, সে আসে নাই । ক্রমে আরও বেলা হওয়াতে খেলা ভাঙ্গিয়া গেল। তাহার বাবা তাহাকে স্নান করিবার জন্য ডাকিল। তবুও কোথায় অমল ? অভিমান তাহার মন ছাপাইয়া উঠিল, বেশ, নাই বা আসিল ? অমলার সহিত তাহার জন্মের মত আডি-আর যদি সে কখনোও তাহার সহিত কথা কয় ! বৈকালেও খেলা আরম্ভ হইল, সকলেই আসিল, অমলা নাই। পাঁচ ছয়টি ছেলেমেয়ে খেলিতে খেলিতে আসিলেও অপুর মনে হইল, কাহার সহিত সে খেলিবে ? কেহই উপযুক্ত খেলার সাগী বলিয়া মনে হইল না। উৎসাহহীনভাবে সে খানিকক্ষণ খেলা করিল, তবুও আমলার দেখা নাই । পরদিন সকালে অমলা আসিল । অপু কোনো কথা বলিল না। অমলা যেখানে বসে, সে তাহার ত্রিসীমানায় ঘেষে না, অথচ মাঝে মাঝে আড়চোখে চাহিয়া দেখে, সে যে রাগ করিয়া এরূপ কবিতেছে, অমলা তাহা বুঝিয়াছে কিনা। অমলা সত্যই প্রথমটা বুঝিতে পারে নাই, পরে সে যখন বুঝিল যে, কিছু একটা হইয়াছে নিশ্চয়, তখন সে কাছে গিয়া জিজ্ঞাসা করিল--কি খোকা কথা বলচো না কেন ?--কি হয়েচে ? অপু অতশত বোঝে না, সে অভিমানে ঠোঁট ফুলাইয়া বলিল-কি হয়েচে বৈকি। তা কিছু কি আবি হয়েচে ? কাল আসিনি কেন ? অমলা অবাক হইয়া বলিল-আসিনি, তাই কি ?--সেইজন্যে রাগ করেচ ? অপু ঘাড নাডাইয়া জানাইল, ঠিক তাই। অমল খিল খিল করিয়া হাসিয়া অপুকে হাত ধরিয়া লইয়া চলিল বাড়ীর ভিতর। সেখানে বধু সব শুনিয়া প্রথমটা হাসিয়া খুন হইল, পরে মুখে হাসি টিপিয়া বলিল,-ত হােলে অমলা তোমার আর এখন বাড়ী যাওয়ার যো নেই তো দেখচি-কি আর করবে, খোকা যখন তোমাকে ছাড়তে পারে না, তখন এখানেই থেকে যাও-আর का झर्श्व বধুর কথার ভঙ্গিতে অমলা কি জানি কি একটা ঠাওরাইয়া লজ্জিত প্রতিবাদের সুরে বলিল-আচ্ছা যাও বৌদি-ও-রকম করলে কিন্তু কক্ষনো আর তোমাদের বাড়ী খানিকক্ষণ পরে অপু অমলার সঙ্গে তাহাদেৱ বাড়ী গেল। অমলা or