পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহারও যদি ঐ রকম হয় ? ঐ তাহার বাবাকে, মাকে, অপুকে ছাড়িয়াআর কখনো দেখা হইবে না-কখনো না-কখনো না-এই তাদের বাড়ী, গাবতলা, ঘাটের পথ ? ভাবিলে গা শিহরিয়া ওঠে, দরকার নাই। কি জানি কেন আজকাল তাহার মনে হয় একটা কিছু তাহার জীবনে শীঘ্র ঘটবে। একটা এমন কিছু জীবনে শীঘ্রই আসিতেছে, যাহা আর কখনো আসে নাই। দিনে রাতে, খেলা-ধূলার, কাজ-কর্মের ফঁাকে ফঁাকে একথা তাহার প্রায়ই মনে হয়-“ঠিক সে বুঝিতে পারে না। তাহা কি, কেমন করিয়ু সেটার আসিবার কথা মনে উঠে, তবুও মনে হয়, কেবলই মনে হয়, তাহা আসিতেছে- আসিতেছে চড়ুই-ভাতির মাঝামাঝি অপুদের বাড়ীর উঠানে কাহার ডাক শোনা গেল। দুৰ্গা বলিল-বিনির গলা যেন-নিয়ে আয় তো ডেকে অপু। একটু পরে অপুর পিছনে পিছনে দুর্গার সমবয়সী একটি কালো মেয়ে আসিল-একটু হাসিয়া যেন কতকটা সম্বমেব সুরে বলিল-কি হচ্ছে দুৰ্গা দিদি ? দুৰ্গা বলিল-আয় না বিনি, চড়ুই-ভাতি কচ্চি-বোসমেয়েট ওপাড়ার কালীনাথ চক্কত্তির মেয়ে-পরণে আধ্যময়লা শাড়ী, হাতে সরু সরু কঁাচের চুডি, একটু লম্বা গড়ন, মুখ নিতান্ত সাধাসিধা। তাহার বাপ যুগীর বামুন বলিয়া সামাজিক ব্যাপাবে পাড়ায় তাদের নিমন্ত্রণ হয় না, গ্রামের একপাশে নিতান্ত সঙ্কুচিত ভাবে বাস কবে । অবস্থাও ভাল নয়। বিনি দুৰ্গার ফরমাইজ খাটিতে লাগিল খুব ৷ বেড়াইতে আসিয়া হঠাৎ সে যেন একটা লাভজনক ব্যাপারের মধ্যে আসিয়া পন্ডিয়াছে, এখন ইহারা তাহাকে সে উৎসবের অংশীদার স্বীকার করিবে কি না করিবে এরূপ একটা দ্বিধামিশ্রিত উল্লাসের ভাব তাহার কথাবার্তার ভাবভঙ্গিতে প্রকাশ পাইতেছিল। দুৰ্গা বলিল-বিনি, আর দুটো শুকৃনে কাঠ দ্ব্যাখতো—আগুনটা জলচে না ভাল বিনি তখনি কাঠ আনিতে ছুটিল এবং একটু পরে একবোঝা শুকনা বেলের ডাল আনিয়া হাজির করিয়া বলিল—এতে হবে দুগগা দিদি-না। আর আনবো ?--দুৰ্গা যখন বলিল-বিনি এসেছে-ও-ও তো এখানে খাবে -আর দুটো চাল নিয়ে আয় অপু-বিনির মুখখান খুশিতে উজ্জল হইয়া উঠিল। খানিকটা পরে বিনি। জল আনিয়া দিল । আগ্রহের সুরে জিজ্ঞাসা করিলকি কি তরকারী দুগগা দিদি ? ভাত নামাইয়া দুৰ্গা ছোবাতে তেলাটুকু দিয়া বেগুন তাহাতে ফেলিয়া দিয়া ভাজে। খানিকটা পরে সে অবাক হইয়া ছোবার দিকে চাহিয়া থাকে, অপুকে S8te