পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সকলের দেখা একে একে হইয়া গেল। দুৰ্গা চলিয়া যাইতেছিল, বুড়ো মুসলমানটি বলিল, দেখবে না খুকী ? দুৰ্গা ঘাড় নাড়িয়া বলিল, না-আমার কাছে পয়সা নেই । লোকটি বলিল, এসে এসো খুকী, দেখে যাও-পয়সা লাগবে নাদুর্গার একটু লজ্জা হইয়াছিল, মুখে বলিল, না-কিন্তু আগ্রহে কৌতুহলে তাহার বুকের মধ্যে চিপ টিপ করিয়া উঠিল। লোকটি বলিল-এসে এসো, দোষ কি ?--এসো, দ্যাখেদুৰ্গা উজ্জলমুখে পায়ে পায়ে বাক্সের কাছে আসিয়া দাডাইল বটে, তবুও সাহস করিয়া মুখটা চোঙের মধ্যে দিতে পারে নাই। লোকটি বলিল, এই নলটার মধ্যে দিয়ে তাকাও দিকি খুকী ? দুৰ্গা মাথার উড়ন্ত চুলের গোছা কানের পাশে সরাইয়া দিয়া চাহিয়া দেখিল। পরের দশ মিনিটের কথার সে কোন বর্ণনা করিতে পারে না । সত্যিকারের মানুষ ছবিতে কি করিয়া দেখা যায় ? কত সাহেব, মেম, ঘর-বাড়ী, যুদ্ধ, সে সব কথা বলিতে পারে না। কি জিনিসই সে দেখিয়াছিল । অপুকে দেখাইতে বড ইচ্ছা করে, দুৰ্গা কতবার খুজিয়াছে, ও খেলা আর cकांनe नि आन नांझे । গল্প ভাল করিয়া শেষ হইতে না হইতে দুৰ্গা জ্বরের ধমকে আর বসিতে পারে। না, উঠিয়া ঘরের মধ্যে কঁথা মুড়ি দিয়া শোয়। আজকাল বাবা বাড়ী নাই, আপুকে আর খুজিয়া মেলা দায়। বই দপ্তরে ঘুণ ধরিবার যোগাড় হইয়াছে। সকালবেলা সেই যে সে এক পুটুলি কড়ি লইয়া বাহির হয়, আর ফেরে একেবারে দুপুর ফুরিয়া গেলে খাইবার সময়। তাহার মা বকে-ছেলের না নিকুচি করেছে-তোমার লেখাপড়া একেবারে ছিকেয় উঠলো ? এবার বাড়ী, এলে সব কথা ব’লে দেবাে, দেখো এখন তুমিঅপু ভয়ে ভয়ে দপ্তর লইয়া বসে। বইগুলা খুব চারিদিকে ছড়ায়। মাকে বলে, একটু খয়ের দাও মা, আমি দোয়াতের কালিতে দেবো।-- পরে সে বসিয়া বসিয়া হাতের লেখা লিখিয়া রৌদ্রে দেয়। শুকাইয়া গেলে খয়ের-ভিজানো কালি, চকু চকু করে--অপু মহা খুশির সহিত সেদিকে চাহিয়া থাকে-ভাবে-আর একটু খয়ের দেবো কাল থেকে-ওঃ কী চকু চকু করছে দ্ব্যাখে একবার ! পানের বাটা হইতে মাকে লুকাইয়া বড় একখণ্ড খয়ের লইয়া কালির দোয়াতে দেয়। পরে লেখা লিখিয়া শুকাইতে দিয়া কতটা আজ জল৷ জল করে দেখিবার জন্য কৌতুহলের সহিত সেদিকে চাহিয়া থাকে মনে হয়। -আচ্ছা, যদি আর একটু দি ? YA