পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভেটেল ধানের চালির ভাত কি আপনারা খেতে পারবেন মা-ঠাকুরোণ - বডড মোটা নিমছাল সিদ্ধ দুৰ্গা আর থাইতে পারে না। তাহার অসুখ একভাবেই আছে। ঔষধ নাই, পথ্য নাই, ডাক্তার নাই, বৈদ্য নাই । বলে-“এক পয়সার বিস্কুট আনিয়ে দেবে মা, নোনতা, মুখে বেশ লাগে ? সাবু তাই জোটে না, তার বিস্কুট ! বৈকালবেলা হইতে আবার ভয়ানক বৃষ্টি নামিল। বৃষ্টির সঙ্গে ঝডও যেন বেশী করিয়া আসে-ঘোর বর্ষণমুখর নির্জন, জলে থৈ থৈ, হু হু পূবে হাওয়া বওয়া, মেঘ অন্ধকারে একাকার ভাদ্র-সন্ধ্যা ! আবার সেইরকম কালে কালো পেজ তুলোর মতো মেঘ উড়িয়া চলিয়াছে। বৃষ্টির শব্দে কান পাতা যায় না। দরজা জানাল দিয়া ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাপটার সঙ্গে বুঠির ছাঢ় হু হু করিয়া ঢোকে-ছেড়া প’লে ছেডো কাপড়-গোজা ভাঙা কাবাটের আড়ালের সাধ্য কি ষে ঝড়ের ভীম। আক্রমণের মুখে দাড়ায়। বেশী রাত্রে সকলে ঘুমাইলে বেশী বৃষ্টি নামিল। সর্বজয়ার ঘুম আসে নাসে বিছানায় উঠিয়া বসে। বাহিরে শুধু একটানা হুস হুস জলের শব্দ ; ক্রুদ্ধ দৈত্যের মতো গর্জমান একটানা গো গো রবে ঝড়ের দমকা বাড়ীতে * "ধিতেছে । জীর্ণ কোঠাখানা এক একবারের দমকায় যেন থর থর করিয়া * "পে, ভয়ে তাহার প্রাণ উড়িয়া যায়-গ্রামের একাধারে বঁাশবনের মধ্যে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে লইয়া নিঃসহায়!-মনে মনে বলে-ঠাকুর, আমি মারি তাতে খেদি নেই-এদের কি করি ? এই রাত্তিরে যাই বা কোথায় ? মনে মনে বসিয়া বসিয়া ভাবে-আচ্ছা যদি কোঠা পড়ে, তবে দালানের দেওয়ালটা বোধ হয়। আগে পড়বে -যেমন শব্দ হবে অমনি পানচালার দোর দিয়ে এদের টেনে বার ক’রে নোবে সে যেন আর বসিয়া থাকিতে পাবে না-কয়দিন সে ওলশাক কচুশাক সিদ্ধ করিয়া খাইয়া দিন কাটাইতেছে--নিজে উপবাসের পর উপবাস দিয়া ছেলেমেয়েকে যাহা কিছু সামান্য খাদ্য ছিল খাওয়াইতেছে- শরীর ভাবনায় অনাহারে দুর্বল, মাথার মধ্যে কেমন করে। ঝড়ের গো গো শব্দ, অনেক রাত্রে ঝড় বাডিল । বাহিরে কি ঝটিকা আসিল । উপায় । , একবার বড় একটা দমকায় ভয় পাইয়া সে বাড়ের গতিক বুঝিবার জন্য সন্তৰ্পণে দালানের দুয়ার খুলিয়া বাহিরের রোয়াকে মুখ বাড়াইল -বৃষ্টির ছাটে কাপড় চুল সব ভিজিয়া গেলা-হু হু একটা হাওয়ার শব্দে বৃষ্টিপতনের ঝড়ের শব্দ ঢাকিয়া গিয়াছো-বাহিরে কিছু দেখা যায় না እዓb”