পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিতোর রক্ষা হইল না। রাণা অমরসিংহ বাদশাহের সন্মান গ্রহণ করিলেন । সর্বহার পিতা প্রতাপসিংহ যিনি পচিশ বৎসর ধরিয়া বনে পর্বতে ভীলের পাল লইয়া যুদ্ধ করিয়াছিলেন, তিনি ব্যথাক্ষুৰূচিত্তে কোথা হইতে দেখিয়াছিলেন। এ সব ? তপ্ত চোখের জলে পুকুর, উইঢিবি, বৈঁচিবন, বঁাশবাগান-সব ঝাপসা হইয়া আসে । সেদিন দুপুরে তাহার বাবা একটা কাগজের মোড়ক দেখাইয়া হাসিমুখে বলিল-দ্যাখে তো খোকা, কি বলে দিকি ? অপু তাড়াতাড়ি বিছানার উপর উঠিয়া বসিল ; উৎসাহের সুরে জিজ্ঞাসা করিল-খবরের কাগজ ? না বাবা ? সেদিন রামকবচ লিখিয়া দিয়া বেহার ঘোষের শাশুড়ীর নিকট যে তিনটি টাকা পাইয়াছে, স্ত্রীকে গোপন করিয়া হরিহর তারই মধ্যে দুটাকা খবরের কাগজের দাম পাঠাইয়া দিয়াছিল, স্ত্রী জানিতে পারিলে অন্য পাঁচটা অভাবের গ্রাস হইতে টাকা দুইটাকে কোন মতেই বঁচানো যাইত না । অপু বাবার হাত হইতে তাড়াতাড়ি কাগজের মোড়কটা লইয়া খুলিয়া ফেলে। হ্যা-খবরের কাগজ বৃটে। সেই বড় বড় অক্ষরে, “বঙ্গবাসী’ কথাটা লেখা, সেই নতুন কাগজের গন্ধটা, সেই ছাপা, সেই সব-যাহার জন্য বৎসরখানেক পূর্বে সে তীর্থের কাকের মত অধীর আগ্রহে ভুবন মুখুয্যেদের চণ্ডীমণ্ডপের ডাকবাক্সটার কাছে পিওনের অপেক্ষায় প্রতি শনিবারে হা করিয়া বসিয়া থাকিত। খবরের কাগজ! খবরের কাগজ ! কি সব নতুন খবর না জানি দিয়াছে ? কি অজানা কথা সব লেখা আছে ইহার বড় বড় পাতায় ? হরিহরের মনে হয়-দুইটা টাকার বিনিময়ে ছেলের মুখে যে আনন্দের হাসি ফুটাইয়া তুলিয়াছে, তাহার তুলনায় কোন বন্ধকী মাকৃড়ী খালাসের আত্মপ্রসাদ মোটেই বেশী হইত না ! অপু খানিকক্ষণ পড়িয়া বলে-দ্যাখে। বাবা, একজন ‘বিলাত যাত্রী’র চিঠি বেরিয়েচে, আজ থেকেই নতুন বেরুলো। খুব সময়ে আমাদের কাগজটা এসেছে-না। বাবা ? তবুও তার মনে দুঃখ থাকিয়া যায় যে, গত বৎসর কাগজখানা হঠাৎ উহার বন্ধ করিয়া দেওয়াতে জাপানী মাকড়সাসুরের গল্পটার শেষ ভাগ তাহার পড়া হয় নাই, রাইকে রাজসভায় যাওয়ার পর তাহার যে কি ঘটিল। তাহা সে खांनिष्प्ष्ड् श्रांप्द्ध नांदेरे । একদিন রাণী বলিল-তোর খাতায় তুই কি লিখছিল রে ? S.