পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দূর নদীতে অন্ধকার রাত্রে জেলেদের আলোয় মাছধরা দোনা-জালের একঘেয়ে। একটানা ঠক্‌ ঠক্‌ শব্দ হইতেছিল। এমন সময় তাহার কানো গেল অনেক দূরে যেন কুঠার মাঠের পথের দিকে অত রাত্রে কে খোলা গলায় গান গাহিয়া পথ চলিয়াছে। কুঠীর মাঠের পথে বেশী রাত্রে বড় একটা কেহ হাটে না। তবুও আধঘুমে কতদিন যে নিশীথ রাত্রির জ্যোৎস্নায় অচেনা পথিক-কণ্ঠে মধুকানের zuSDBDD BBB DBDB D DBDB BB DDDD DBDDB BDBBDDYSuiiB সে-লার যা শুনিয়াছিল তাহ। একেবারে নতুন। সুরাটা যে আয়ত্ত করিতে পারে। নাই-আধ-জাগরণের ঘোরে সুষমাময়ী সুরলক্ষ্মী দুই ঘুমের মাঝখানের পথ বাহিয়া কোথায় অন্তহিত হইয়াছিলেন, কোনদিন আর তঁাহার সন্ধান মিলে নাই-কিন্তু অপু কি তাহা কোনোদিন ভুলিবে ? চড়ক দেখিয়া নানা গায়ের চাষাদের ছেলেমেয়ের রঙিন কাপড় জামা, কেউ বা নতুন কোরা শাড়ী পরণে, সারি দিয়া ঘরে ফিরিতেছে। ছেলেরা বঁশি বাজাইতে বাজাইতে চলিয়াছে। গোষ্ঠবিহারের মেলা দেখিতে চার পাচ ক্রোশ দূর হইতেও লোকজন আসিয়াছিল। শোলার পাখী, কাঠের পুতুল, রঙিন কাগজের পাখা, রং করা হঁাড়ি, ছোব-সকলেরই হাতে কোনো না। কোনো জিনিস। চিনিবাস। বৈষ্ণব মেলায় বেগুনি-ফুলুরীর দোকান খুলিয়াছিল, তাহার দোকান হইতে অপু দু’পয়সার তেলে-ভাজ খাবার কিনিয়া হাতে লইয়া বাড়ীর দিকে চলিল। ফিরিতে ফিরিতে মনে হইল, যেখানে তাহারা উঠিয়া যাইতেছে সেখানে কি রকম গোষ্ঠবিহার হয় ? হয়তো সে আর চড়কের মেলা দেখিতে পাইবে না। মনে ভাবিল-সেখানে যদি চড়ক না হয় তবে বাবাকে বোলবো, আমি দেখবো বাবা, নিশ্চিন্দিপুর চল যাই-না হয় দু'দিন এসে খুড়ীমাদের বাড়ী থেকে যাবো ? চড়কের পরদিন জিনিসপত্র বঁাধাৰ্ছাদা হইতে লাগিল। কাল দুপুরে আহারাদির পর রওনা হইতে হইবে। সন্ধ্যার সময় রান্নাঘরের দাওয়ায় তাহার মা তাহাকে গরম গরম পরোটা ভাজিয়া দিতেছিল। নীলমণি জ্যেঠার ভিটায় নারিকেল গাছটার পাতাগুলি জ্যোৎস্নার আলোয় চিকচিক্‌ করিতেছে-চাহিয়া দেখিয়া অপুর মন দুঃখে৷ পরিপূর্ণ হইয়া গেল। এতদিন নতুন দেশে যাইবার জন্য তাহার যে উৎসাহটা৷ ছিল, যতই যাওয়ার দিন কাছে আসিয়া প্লাড়িতেছে, ততই আসন্ন বিরহের গভীর ব্যথায় তাহার মনের সুরটি করুণ হইয়া বাজিতেছে। Rèbr