পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরিহর খুশি হইয়া বলে-তুই বুঝি শুনিস খোকা ? -আমি তো রোজই থাকি।--তুমি কাল যখন ভরতের মা মারা যাওয়ার কথা বলছিলে আমি তখন তো তোমার পিছন দিকে বসে-মন্দিরের ধাপে --তোর কি রকম লাগে-ভাল লাগে ? -খু-উ-উ-উব। আমি তো রোজ রোজ শুনিঅপু কিন্তু একটা কথা লুকায়। যেদিন তাহার সঙ্গীরা থাকে, সেদিন। কিন্তু বাবার দিকে সে যায় না। সেদিন বাবার নিকট দিয়া যাইতেছিল, তাহার বাবা দেখিতে পাইয়া ডাকিল-খোকা, ও খোকা তাহার সঙ্গের বন্ধুটি বলিল-তোমাকে চেনে না কি ? অপু শুধু ঘাড় নাড়িয়া জানায়, হ্যা। সে বাবার কাছে আসে নাই সেদিন । তাহার বাবা ঘাটে কথকতা করিতেছে, একথা বন্ধুরা পাছে টের পায়! সে পল্টর দাদা ছাড়া অন্য বন্ধুদের কাছে গল্প করিয়াছে কাশীতে তাহদের বাড়ী আছে, তাহারা কাশীতে হাওয়া বদলাইতে আসিয়াছে, দেশে খুব বড় বাড়ী, তাহার বাবা কণ্টাক্টরী করেন, তা ছাড়া দেশে জমিদারীও আছে। শেষে বলে-কিন্তু জমিদারী থাকলে কি হবে, কিস্তি দিয়ে কিই বা থাকে ? তাহার বন্ধুদের বয়স তাহার অপেক্ষা খুব বেশী নয় বলিয়াই বোধ হয় তাহার বাণিত গল্পের সঙ্গে তাহার পোষাক পরিচ্ছদের অসঙ্গতি ধরা পড়ে না, বিশেষতঃ তাহার সুন্দর মুখের গুণে সব মানাইয়া যায়। পূর্ণমার দিন কথক ঠাকুরের ওখানে বেশ ভিড় হইল। সন্ধ্যার পর হরিহর কথা। শেষ করিয়া ঘাটের রানায় বসিয়া বিশ্রাম করিতেছিল, কথক ঠাকুর জলে হাত মুখ ধুইতে নামিল। হরিহরকে দেখিয়া বলিল-এই যে আপনিও আছেন, দেখলেন তো কাণ্ড, পুস্নিমের দিনটা-বলি আজ দিনটা ভাল আছে, বামনভিক্ষে লাগাই-আগে আগে এই কাশীতে বামন-ভিক্ষা হোলে পনের সের আধমণ করে চাল পড়তো-আজকাল মশাই মহা বামন-ভিক্ষেতেও লোকে ভেজে না-চালের তা একটা দানাও না-এদিকে সিকে-পাঁচেক হবে, তার মধ্যে আবার দুটো আচল দোয়ানি--মশায়ের শিক্ষা কোথায় ? --শিক্ষা তো ছিল এই কাশীতেই, অনেকদিন আগে । তবে এত দিন দেশেই ছিলাম-এইবার এখানে এসে বাস ক’রে আছি।-- s --মশায়ের বাসা কি নিকটে -একটু চা খাওয়াতে পারেন ?-কদিন থেকে ভাবচি একটু চা খাবে-এই দেখুন না, চাদরের মুড়োয় চা বেঁধে নিয়ে নিয়ে ঘুরি, বলি না হয় কোনো হালুইকরের দোকানে একটু গরমজলি করিগেগলা বসে গিয়েছে, একটু লোন-চা খেলে গলাটা 3°创