পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে উপরে উঠবার সিড়িয় দিকে চাহিয়াই তটস্থ অবস্থায় দাড়াইয়া রহিল। সর্বজয়ী চাহিয়া দেখিল একজন পয়ষট্টি-সত্তর বছরের বৃদ্ধ সিড়ি বাহিয়া নামিতেছেন, পাশাপাশি গৃহিণী, পিছনে দুই বৌ-রাণী ও এবাড়ীর মেয়ে অরুণা ও সুজাতা । সকল বি-চাকরের দল তটস্থ অবস্থায় সিড়ির নীচের বারান্দায় কাতার দিয়া দাড়াইয়া-এ উহার পিঠে উকি মরিয়া দেখিতে লাগিল । সর্বজয়। ক্ষেমি বিকে চুপি চুপি বলিল, কে ক্ষেমিমাসি ? ক্ষেমি বি ফিস ফিস করিয়া কি বলিল-কোথাকার রাণীমা-সর্বজয়া ভাল শুনিতে পাইল না । কিন্তু তাহার মনে হইল ঠিক এইরকম চেহারার মানুষ সে যেন কোথায় আগে দেখিয়াছে। গিল্পী কাহাকে বলিলেন-খিড়কীর ফটকে ইহার পান্ধী আসিয়াছে কিনা দেখিয়া আসিতে। বৃদ্ধার নিজের সঙ্গেও দুই তিনটি ঝি আসিয়াছে, তাহারা পিছনে পিছনে আছে। নানা বিদায়-আপ্যায়নের বিনিময় হইল, বহু DuBuD DBBu BDBBD DBDB BDDDDS DDDS BBBDD BBuBB D DBuDB BD হইয়া প্রণাম করিয়া খানিকক্ষণ যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়া রহিল। সর্বজয়া মনে মনে ভাবিল-এর এত বড় লোক, এরা যখন এত খাতির করচে, তখন তো যে সে নয়- বুদ্ধার ষোল বেহারিার প্রকাণ্ড পান্ধীটা খিড়িকীর ফটকেই এতক্ষণ ছিল, বৃদ্ধ ও পাল্কীতে উঠিলেন। তঁাহার দারোয়ানেরা পান্ধীর সামনে পিছনে দাডাইল । তঁহকে বিদায় দিয়া গৃহিণী, অন্যান্য মেয়ের উপরে উঠিয়া গেলেন। মাসিমা রুটির ঘরে আসিয়া চুপি চুপি বলিলেন-পয়সা রে বাপু, দেখলে তো পয়সার আদরটা ? নিজেরই মস্ত জমিদারী, দুলাখ টাকা দান করেছেন বাঙলা দেশের কোথাকার কলেজের জন্যে,-পয়সারই আদর-আর এই তো আমিও আছি-ওদের তো আপনার লোক-গেরাজি করে কেউ ! সর্বজয়ার কিন্তু সেদিকে মন ছিল না। এইমাত্র তাহার মনে পড়িয়াছে। অনেকটা এইরকম চেহারার ও এই রকম বয়সের-সেই তাহার বুড়ী ঠাকুরঝি ইন্দির ঠাকুরুণ, সেই ছেড়া কাপড় গেরো দিয়া পরা, ভাঙা পাথরে আমড়াভাতে ভাত, তুচ্ছ একটা নােনাফলের জন্য কত অপমান, কেউ পৌঁছে না, কেউ মানে না, দুপুর বেলায় সেই বাড়ী হইতে বিদায় করিয়া দেওয়া, পথে পড়িয়া সেই দীন মৃত্যু সর্বজয়ার অশ্রু বাধা মানিল না। মানুষের অন্তর-বেদন মৃত্যুর পরপারে পৌছায় কিনা সর্বজয়া জানে না, তবু সে আজ বারবার মনে মনে ক্ষমা চাহিয়া অপরিণত বয়সের অপরাধের, প্রায়শ্চিত্ত করিতে চাহিল। v S&se