পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপু বলিল-নারকোলের মালাটা আমায় দে। ওতে ঢেলে নিয়ে আসবো।--তুই খিড়কী দোরে গিয়ে দ্যাখ, মা আসচে। কিনা। দুর্গ নিম্নস্বরে বলিল, তেল টেল যেন মেঝেতে ঢালিসনে, সাবধানে নিবি, নইলে মা টের পাবে-তুই তো একটা হাবা ছেলে অপু বাড়ীর মধ্য হইতে বাহির হইয়া আসিলে দুৰ্গা তাহার হাত হইতে মালা লইয়া আমগুলি বেশ করিয়া মাখিল,-বলিল, নে হাত পাত । --তুই অতগুলো খাবি দিদি ? --অতগুলো বুঝি হােল ? এই তো ভারি বেশী-যা-আচ্ছা নে আর দু’খানা-বাঃ, দেখতে বেশ হয়েচে রে, একটা লঙ্কা আনতে পারিস ? আর একখানা দেবো তা’হলে —লঙ্কা কি করে পাড়বো দিদি ? মা যে তক্তার ওপর রেখে দ্যায়, আমি যে নাগাল পাইনে ? তবে থাকুকে যাক-আবার ওবেলা আনবো এখন-পটলিদের ডোবার ধারের আমগাছটায় গুটী যা ধরেচে-দুপুরের রোদে তলায় ঝরে পড়ে দুৰ্গাদের বাড়ীর চারিদিকেই জঙ্গল। হরিহর রায়ের জ্ঞাতি ভ্রাতা নীলমণি রায় সম্প্রতি গত বৎসর মারা গিয়াছেন, তাহার স্ত্রী পুত্রকন্যা লইয়া নিজ পিত্রালয়ে বাস করিতেছেন। কাজেই পাশের এ ভিটাও জঙ্গলাবৃত হইয়া পড়িয়া আছে। নিকটে আর কোনো লোকের বাড়ী নাই। পাচ মিনিটের পথ গেলে তবে ভুবন মুখুয্যের বাড়ী। হরিহরের বাড়ীটাও অনেক দিন হইয়া গেল মেরামত হয় নাই, সামনের দিকের রোয়াক ভাঙা, ফাটলে বন-বিছুটির ও কালমেঘ গাছের বন গজাইয়াছে -ঘরের দোর-জানালার কপাট সব ভাঙা, নারিকেলের দড়ি দিয়া গরাদের সঙ্গে दक्षिा अछि । খিড়কী দোর ঝনাৎ করিয়া খুলিবার শব্দ হইল এবং একটু পরেই সর্বজয়ার গলা শুনা গেল-দুগগা ও দুগগা— দুৰ্গা বলিল—ম ডাকচে, যা দেখে আয়-ওখান খেয়ে যা-মুখে যে নুনের ওঁড়ো লেগে আছে, মুছে ফ্যাল মায়ের ডাক আর একবার কানে গেলেও দুর্গার এখন উত্তর দিবার সুযোগ নাই, মুখ ভতি। সে তাড়াতাড়ি জারানো আমের চাকুলাগুলি খাইতে লাগিল। পরে এখনো অনেক অবশিষ্ট আছে দেখিয়া কঁঠালগাছটার কাছে সরিয়া গিয়া গুড়ির আড়ালে দাড়াইয়া সেগুলি গোগ্রাসে গিলিতে লাগিল । অস্তু তাহার পাশে গড়াইয়া নিজের অংশ প্রাণপণে গিলিতেছিল, কারণ

  • Koga