পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাতের পয়সা ফুরাইয়া আসিবার সঙ্গে সঙ্গে অপু এত সাধ করিয়া কেনা শখের আসবাবগুলি বেচিতে আরম্ভ করিল। প্রথমে গেল প্লেটগুলি-তাও কেহই কিনিতে চায় না-অবশেষে চোদ্দ আনায় এক পুরানো দোকানদারের কাছে বেচিয়া দিল । সেই দোকানদারই ফুলদানিটা আট আনায় কিনিল, মু’খানা ছবি দশ আনায়। তবু শেষ পর্যন্ত সে স্যাণ্ডোর ডাম্বেলটা ও জাপানী পদাটা প্রাণপণে আঁকড়াইয়া রহিল । সে শীঘ্রই আবিষ্কার করিল-ছাতু জিনিসটার অসীম গুণ-সস্তার দিক হইতে পটে, অল্প খরচে পেট ভরাইবার দিক হইতেও বটে। আগে আগে চৈত্র বৈশাখ মাসে তাহার মা নতুন যবের ছাতু কুটিয়া তাহদের খাইতে দিতেন—তখন ছাতু ছিল বৎসরের মধ্যে একবার পাল-পার্বণে শখ করিয়া খাইবার জিনিস, তাহাই এখন হইয়া পডিল প্রাণধারণের প্রধান অবলম্বন। আগে একটু আধটু গুডে তাহার ছাতু খাওয়া হইত না, গুড় আরও বেশী করিয়া দিবার জন্য মাকে কত বিরক্ত করিয়াছে, এখন খরচ বঁাচাইবার জন্য শুধু নুন ও তেওয়ারীবাহুর নিকট তইতে কঁাচা লঙ্কা আনাইয়া তাই দিয়া খায় । অভ্যাস নাই, খাইতে ভাল जां*ों मी । কিন্তু ছাতু খুব সুস্বাদু না হউক, তাহাও বিনা পয়সায় পাওয়া যায় না। অপু বুঝিতেছিল-টানাটানি করিয়া আর বড়-জোর দিনদশেক-তারপর কুলকিনারা ঙ্গীন অজানা মহাসমুদ্র !!--তখন কি উপায় ? সে রোজ সকালে উঠিয়া নিকটবর্তী এক লাইব্রেরীতে গিয়া দৈনিক ইংরেজী বাংলা কাগজে ছেলে-পড়ানোর বিজ্ঞাপন খুজিয়া দেখে। গ্যাসপোস্টের গায়েও অনেক সময় এই ধরণের বিজ্ঞাপন মারা থাকে-চলিতে চলিতে গ্যাস পোস্টের বিজ্ঞাপন দেখিয়া বেড়ানো তাহার একটা বাতিক হইয়া দাড়াইল ! প্রায়ই বাড়িভাড়ার বিজ্ঞাপন।-আলো ও হাওয়াযুক্ত ভদ্রপরিবারের থাকিবার উপযোগী দুইখানি কামরা ও রান্নাঘর, ভাড়া নামমাত্র। যদি বা কালেভদ্রে এক আধটা ছেলে-পড়াবার বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়, তার ঠিকানাটা আগে কেহ ছিড়িয়া দিয়াছে। কাপড় ময়লা হইয়া আসিল বেজায়, সাবানের অভাবে কাচিতে পারিল না । তেওয়ারীর স্ত্রী একদিন সোডা সাবান দিয়া নিজেদের কাপড় সিদ্ধ করিতে বসিয়াছে, অপু নিজের ময়লা শার্ট ও ধুতিখানা লইয়া গিয়া বলিল, বহু, তোমার সাবাদের বোল একটু দেবে, আমি এ দুটোয়। মাখিয়ে রেখে দি--তারপর ওবেলা কলেজ থেকে এসে কলে জল এলে কোচে নেবোদ্য-দেবে ?• • • তেওয়ারী বধু বলিল, দে দিজিয়ে না। বাবুজা, হাম হাড়ি মে ভাল দেগা। STe