পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু বাবার, বিশেষত মার সামনে সম্মুখ দুয়ার দিয়া বাড়ী ঢুকিতে তাহার সাহস श्ल न। . উঠানে নামিয়া সে কঁঠালতলায় দাড়াইয়া কি করিবে ঠিক করিতে না পারিয়া নিরুৎসাহীভাবে এদিক ওদিক চাহিতে লাগিল । পরে সেখানেই বসিয়া। পড়িয়া আঁচলের খুঁট খুলিয়া কতকগুলি শুকুনো রীড়া ফলের বীচি বাহির করিল। খানিকক্ষণ চাহিয়া থাকিয়া সে আপন মনে সেগুলি গুনিতে আরম্ভ করিল, একদুই-তিন-চার-ছাব্বিশটা হইল। পরে সে দুই তিনটা করিয়া বীচি হাতের উল্টো পিঠে বসাইয়া উচু করিয়া ছুড়িয়া দিয়া পরে হাতের সোজা পিঠ পাতিয়া ধরিতে লাগিল। মনে মনে বলিতে লাগিল-অপুকে এইগুলো দেবো।--আর এইগুলো পুতুলের বাক্সে রেখে দেবো-কেমন বীচিগুলো তেল চুকচুক কচ্ছে-আজই গাছ থেকে পড়েচে, ভাগ্যিস আগে গেলাম, নৈলে সব গরুতে খেয়ে ফেলে দিতো, ওদের রাঙী গাইটা একেবারে রাক্কাস, সব জায়গায় যাবে, সেবার কতকগুলো এনেছিলাম আর এইগুলো নিয়ে অনেকগুলো হােল। সে খেলা বন্ধ করিয়া সমস্ত বীচি আবার সযত্নে আঁচলের খুঁটে বাধিল । পরে হঠাৎ কি ভাবিয়া রুক্ষ চুলগুলি বাতাসে উড়াইতে উড়াইতে মহাখুশির সহিত পুনরায় সোজা বাটীর বাহির হইয়া গেল। পথের পাঁচালী নবম পরিচ্ছেদ আপুদের বাড়ী হইতে কিছু দূরে একটা খুব বড় অশ্বখ গাছ ছিল। কেবল তাহার মাথাটা উহাদের দালানের জানাল কি রোয়াক হইতে দেখা যায়। অপু মাঝে মাঝে সেইদিকে চাহিয়া দেখিত। যতবার সে চাহিয়া দেখে, ততবার তাহার যেন অনেক-অনেক-অনেক দূরের কোন দেশের কথা মনে হয়কোন দেশ, এ তাহার ঠিক ধারণা হইত না-কোথায় যেন কোথাকার দেশমারি মুখে ঐ সব দেশের রাজপুত্তরদের কথাই সে শোনে। অনেক দূরের কথায় তাহার শিশুমানে একটা বিস্ময়মাখানে আনন্দের ভাবের সৃষ্টি করিত। নীল রং-এর আকাশটা অনেক দূর, ঘুড়িটা-কুঠির মাঠটা অনেক দূৱ-সে। বুঝাইতে পারিত না,-বলিতে পারিত না কাহাকেও, কিন্তু এসব কথায় তাহার মন যেন কোথায় উড়িয়া চলিয়া যাইত-এবং সর্বাপেক্ষা কৌতুকের বিষয় এই যে, অনেক দূরের এই কল্পনা তাহার মনকে অত্যন্ত 总象