পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজার দালানে বসিয়াছিল, চুটিয়া গিয়া বাড়ির মধ্যে খবর দিল। এক মুহুর্তে বাড়ির উপরের নিচের সব জানালা খুলিয়া গেল, বাড়িতে কি-বৌয়ের সংখ্যা নাই, সকলে জানালা হইতে মুখ বাড়াইয়া দেখিতে লাগিলেন-মুষলধারায় বৃষ্টিপাত অগ্রাহ করিয়া অপর্ণার মা উঠানে তাহাকে লইতে ছুটিয়া আসিলেন, সারা বাড়িতে একটা আনন্দের সাড়া পড়িয়া গেল । ফুলশয্যার সেই ঘরে, সেই পালঙ্কেই রাত্রে শুইয়া সে অপর্ণার প্রতীক্ষায় अश्व्नि । এক বৎসরে অপর্ণার এ কি পরিবর্তন ! তখন ছিল বালিকা-এখন ইহাকে দেখিলে যেন আর চেনা যায় না !! লীলার মত চোখ-ঝলসানো সৌন্দর্য ইহার নাই বটে, কিন্তু অপর্ণার। যাহা আছে, তাহা উহাদের কাহারও নাই। অপুর মনে হইল দু-একখানা প্রাচীন পটে আঁকা তরুণী-দেবীমূতির, কি দশমহাবিদ্যার ষোড়শী মৃতির মুখে এ-ধরণের অনুপম, মহিমময় স্নিগ্ধ সৌন্দর্য সে দেখিয়াছে। একটু সেকেলে, একটু প্রাচীন ধরণের সৌন্দর্য সুতরাং দু'প্রাপ্য। যেন মনে হয় এ খাটি বাংলার জিনিস, এই দূর পল্লীপ্রান্তরের নদীতীরের সকল শ্যামলতা, সকল সরসত, পথপ্রান্তে বনফুলের সকল সরলতা ছাড়িয়া ও মুখ গড়া, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া বাংলার পল্লীর চুত-বকুল-বীথির ছায়ায় ছায়ায় কত অপরাহ্রে নদীঘাটের যাওয়া-আসার পথে এই উজ্জলশ্যামবর্ণা, রূপসী তরুণী রন্ধুদের লক্ষ্মীর মত আলতা-রাঙা পদচিহ্ন কতবার পড়িয়াছে, মুছিয়াছে, আবার পড়িয়াছে-ইহাদেরই স্নেহ-প্রেমের, দু:খসুখের কাহিনী, বেহুলা লখিন্দরের গানে, ফুল্পরার বারোমাস্যায়, সুবচনীর ব্রতকথায়, বাংলার বৈষ্ণবকবিদের রাধিকার-রূপবর্ণনায়, পাড়াগায়ের ছড়ায়, উপকথায় সুয়োরানী দুয়োরানীর গল্পে ! অপু বলিল-তোমার সঙ্গে কিন্তু আড়ি, সারা বছরে একখানা চিঠি দিলে अi (कम ?- অপর্ণা সলজ্জ মৃদু একটু হাসিয়া চুপ করিয়া রহিল । তারপর একবার ডাগর চোখদু'টি তুলিয়া স্বামীর দিকে চাহিয়া-চাহিয়া দেখিল। খুব মৃদুস্বরে মুখে হাসি টিপিয়া বলিল-আর আমার বুঝি রাগ হতে নেই ? অপু দেখিল-এতদিন কলিকাতায় সে জারুল কাঠের তক্তপোশে শুইয়া অপর্ণার যে মুখ ভাবিত-আসল মুখ একেবারেই তাহা নহে-ঠক এই অনুপম মুখই সে দেখিয়াছিল বটে ফুলশয্যার রাত্রে, এমন ভুলও হয়! --পূজোর সময় আসিনি তাই ?--তুমি ভাবতে কি না ?-ও-সব মুখের কখা, ছাই ভাবতে - Stታ&ኃ