পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৫৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড়দিদিকে আপনি চেনেন না ? সুজাতাদি ? এখানেই আছেন, এসেছেন। আজ -छांकब ऊँiटक অপুর মনে পড়িল সুজাতাকে। বড়বৌরানীর মেয়ে বাল্যের সেই সুন্দরী, তী সুজাতা-বধর্মানের বাড়িতে তাহারই যৌবনপুষ্পিত তনুলতাটি একদিন অপুর অনভিষ্ট শৈশবচক্ষুর সম্মুখে নারী-সৌন্দর্যের সমগ্র ভাণ্ডার যেন নিঃশেষে উজাড় করিয়া ঢালিয়া দিয়াছিল-বারো বৎসর পূর্বের সে উৎসবের দিনটা আজও স্পষ্ট মনে পড়ে ! একটু পরে সুজাত হাসিমুখে পর্দা ঠেলিয়া ঘরে ঢুকিল, কিন্তু একজন অপরিচিত, সুদর্শন, তরুণ যুবককে ঘরের মধ্যে দেখিয়া প্রথমটা সে তাড়াতাডি পিছু হাটিয়া পর্দাটা পুনরায় টানিতে যাইতেছিল-বিমলেন্দু হাসিয়া বলিল— বাঃ রে, ইনিই তো অপূর্ববাবু, বড়দি চিনতে পারেন নি ? অপু উঠিয়া পায়ের ধূলা লইয়া প্রণাম করিল। সে সুজাতা আর নাই, বয়স ত্রিশ পার হইয়াছে, খুব মোটা হইয়া গিয়াছে, মাথার সামনের দিকে দুএক গাছ চুল উঠতে শুরু হইয়াছে, যৌবনের চটুল লাবণ্য গিয়া মুখে মাতৃত্বের কোমলতা। বর্ধমানে থাকিতে অপুর সঙ্গে একদিনও সুজাতার আলাপ হয় নাই-রাধুনীর ছেলের সঙ্গে বাড়ির বড় মেয়ের কোন আলাপই বা সম্ভব ছিল ? সবাই তো আর লীলা নয়! তবে বাড়ীর রাধুনী বামনীর ছেলেটিকে ভয়ে ভয়ে বড়লোকের বাড়ির একতলা দালানের বারান্দাতে অনেকবার সে বেড়াইতে ঘোরাফেরা করিতে দেখিয়াছে বটে । সুজাতা বলিল-এসে এসো, ব’স । এখানে কি করা ? মা কোথায় ? —ম তো অনেকদিন মারা গিয়াছেন। —তুমি বিয়ে-খাওয়া করেছ তো-কোথায় ? সে সংক্ষেপে সব বলিল । সুজাতা বলিল-তা আবার বিয়ে কর নি ? না। না, বিয়ে ক’রে ফেল, সংসারে থাকতে গেলে ও-সব তো আছেই, বিশেষ যখন তোমার মা-ও নেই। সে বাড়ির আর মেয়ে-টেয়ে নেই ? অপুর মনে হইল। লীলা থাকিলে, সে “তোমার মা’ এ-কথা না বলিয়া শুধু “মা”। বলিত, তাহাই সে বলে। লীলার মত আর কে এমন দয়াময়ী আছে ষে তাহার জীবনে, তাহার সকল দারিদ্র্যাকে সকল হীনতাকে উপেক্ষা করিয়া পরিপূর্ণ করুণার ও মমতার স্নেহপাণি সহজ বন্ধুত্বের মাধুর্ষে তাহার দিকে এমন প্রসারিত করিয়া দিয়াছিল ? সুজাতার কথার উত্তর দিতেই এ-কথাটা ভাবিয়া সে কেমন অন্যমনস্ক হইয়া গেল । , স্নহজাত ভিতরে চলিয়া গেলে অপুর মনে হইল, শুধু মাতৃত্বের শান্ত, 89y