পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৫৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লীলার মুখের দিকে চাহিয়া চাহিয়া দেখিতেছিল। এতকাল পরে লীলাকে আবার এত কাছে পাইয়াছে-বার বার দেখিয়াও যেন তৃপ্তি হইতেছিল না । লীলা অনর্গল বকিতেছিল, নানা রকম মোটরগাডির তুলনামূলক সমালোচনা করিতেছিল, মাঝে মাঝে অপুব সম্বন্ধে এটা-ওটা প্রশ্ন করিতেছিল। লেক দেখিয়া অপু কিন্তু নিরাশ হইল। সে মনে মনে ভাবিল-এই লেক । এরই এত নাম! এ, কলকাতার বাবুদের ভাল লাগিতে পারে।--ভারী তো ! লীলা আবার এবই এত সুখ্যাতি করছিল—আহা, বেচারী কলকাতা ছেড়ে বিশেষ কোথাও তো যায় নি। ---লীলা পাছে অপ্রতিভ হয় এই ভয়ে সে নিজের মতট আর ব্যক্ত করিল না । একটা নারিকেল গাছের তলায় বেঞ্চি পাতাসেখানে দু’জনে বসিল। বিমলেন্দু মোটর লইয়া লেক ঘুরিতে গেল। লীলা হাসিমুখে বলিল-তারপব, তুমি নাকি দিগ্বিজয়ে বেরিয়েছিলে ? --তোমাব শ্বশুব বাড়িব দেশে গিয়েছিলুম-জব্বলপুরের কাছে।-বলিয়া ফেলিয়। অপু ভাবিল কথাটা বলা ভাল হয় নাই, হয় তো লীলার মনে কষ্ট হইবে-ছিঃ- কথাটা ঘুরাইয়া ফেলিয়া বলিল-আচ্ছ। ঐ দ্বীপ-মতন ব্যাপারগুলো- ওতে যাবার পথ নেই• • • —সঁাতার দিয়ে যাওয়া যায়। তুমি তো ভাল সঁাতার জানো-না ? ও-সব কথা যাক-এতদিন কোথায় ছিলে, কি করছিলো বলে । তোমাকে দেখে আজি এত খুশী হয়েছি!--আমার বাসায় এসো আলিপুরে-চা খাবে। একটু তামাটে রঙ হয়েছে কেন ?--রোদে ঘুরে ঘুবে বুঝি -আচ্ছা, আমার কথা তোমার মনে ছিল ? অপু একটু হাসিল। কোন নাটুকে ধরণের কথা সে মুখে বলিতে পারে। না। আর এই সময়েই যত মুখচোরা রোগ আসিয়া জোটে ! কতকাল পরে তো লীলাকে এক। কাছে পাইয়াছো-কিন্তু মুখে কথা জোগায় কৈ ?-কত কথা লীলাকে বলিবে ভাবিয়াছিল-এখন লীলাকে কাছে পাইয়া সে-সব কথা মুখ দিয়া তো বাহির হয়ই না-বরং নিতান্ত হাস্যকর বলিয়া মনে হয়। হঠাৎ লীলা বলিল-হঁ্যা ভালো কথা, তুমি নাকি বই লিখেছ? একদিন আমাকে দেখাবে না, কি লিখলে ? আমি জানি তুমি একদিন বড় লেখক হবে, তোমার সেই ছেলেবেলার গল্প লেখার কথা মনে আছে ? তখন থেকেই জানি । পরে সে একটা প্রস্তাব করিল। বিমলেন্দুর মুখে সে শুনিয়াছে, বইওয়ালারা বই লইতে চায় না-ছাপাইতে কত খরচ পড়ে ? এ বই ছাপাইয়া বাহির