পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়ের ভয়ে সকালে নাহিয়া আসিয়া ভিতরের উঠানের পেঁপেতলায় পুণ্যিপুকুরের ব্রত করিতেছে। উঠানে ছোট্ট চৌকোণা গর্ত কাটিয়া তাহার চারিধারে ছোলা, মটর ছড়াইয়া দিয়াছিল- ভিজে মাটিতে সেগুলির অন্ধুর বাহির হইয়াছেচারিদিকে কলার ছোট বেগ পুতিয়া ধারে পিটুলি গোলার আলপনা দিতেছে -পদ্মলতা,-“পাখী, ধানের শীষ, নতুন ওঠা সূর্য। দুৰ্গা বলিল,-দাড়া, মন্তরটা বলে চল একজায়গায় যাব। —কোথা রে, দিদি—চল না, নিয়ে যাবে এখন, দেখিস এখন- । পরে আনুষঙ্গিক বিধি অনুষ্ঠান সাঙ্গ করিয়া সে এক-নিঃশ্বাসে আবৃত্তি করিতে লাগিল পুণ্যিপুকুর পুষ্পমালা কে পুজে রে দুকুর বেলা ? আমি সতী লীলাবতী ভায়ের বোন ভাগ্যবতীঅপু দাড়াইয়া শুনিতেছিল, বিন্দ্রপের ভঙ্গিতে হাসিয়া বলিল-ইঃ ! দুৰ্গা ছড়া থামাইয়া ইষৎ লজ্জা মিশানো হাসির সঙ্গে বলিল-তুই ও রকম কচ্চিস কেন ? যা এখান থেকে-তোর এখানে কি ?-যা । অপু হাসিয়া চলিয়া গেল। যাইতে যাইতে আবৃত্তি করিতে লাগিল-আমি সতী লীলাবতী ভাই বোন ভাগ্যবর্তী, হি হি, ভাই বোন ভাগ্যবতী-হি হি দুৰ্গা বলিল, তোমার বড় ইয়ে হয়েচে, না ? মাকে ব’লে তোমার ভ্যাংচানো বার করবে। এখন ব্রতানুষ্ঠান শেষ করিয়া দুৰ্গা বলিল, চল গড়ের পুকুরে অনেক পানফল হ’য়ে আছে-ভেঁাদার মা বলছিল, চল নিয়ে আসি গ্রামের একেবারে উত্তরাংশে চারিধারে বঁাশবন ও আগাছা এবং প্রাচীন আমর্কাঠালের বাগানের ভিতর দিয়া পথ। লোকালয় হইতে অনেক দূরে গভীর বন যেখানে শেষ হইয়াছে, সেখানে মাঠের ধারে মজা পুকুরটা । কোনকালে গ্রামের আদি বাসিন্দা মজুমদারের বাড়ীর চতুর্দিকে যে গড়খাই৷ ছিল তাহার অন্য অংশ এখন ভরাট হইয়া গিয়াছে।--কেবল এই খাতটাতে বারোমাস জল থাকে, ইহারই নাম গড়ের পুকুর। মজুমদারের বাড়ী কোন চিহ্ন এখন নাই। সেখানে পৌছিয়া তাহারা দেখিল পুকুরে পানফল অনেক আছে বটে, কিন্তু কিনারার ধারে বিশেষ কিছু নাই, সবই জল হইতে দূরে। দুৰ্গা বলিল-অপু, একটা বঁাশের কঞ্চি দ্ব্যাখ তো খুঁজে-তাই দিয়ে টেনে টেনে আনবো। পরে সে পুকুরধারের ঝোপের শেওড়া গাছ হইতে পাকা শেওড়ার ফল তুলিয়া, খাইতে লাগিল। অপু বনের মধ্যে কফি খুজিতে খুজিতে দেখিতে পাইয়া, ...athair.