পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুই তিন দিনে সবাই মিলিয়া লীলাকে সরাইয়া তুলিল। জ্ঞান হইলে সে একদিন কেবল অপুকে ঘরের মধ্যে দেখিতে পাইয়। কাছে ডাকিয়া ক্ষীণ সুরে বলিল-কখন এলে অপূব ? রোগ হইতে উঠিয়াও লীলাক স্বাস্থ্য ভাল হইল না। শুইয়া আছে তো শুইয়াই আছে, বসিয়া আছে তো বসিয়াই আছে। মাথার চুল উঠিয়া যাইতে লাগিল। আপন মনে গুম হইয়া বসিয়া থাকে, ভাল করিয়া কথা বলে না, হাসেও না। কোথাও নডিতে চডিতে চায় না । ইতিমধ্যে কাশী হইতে লীলার মা আসিলেন। বাপের বাডি থাকেন, রোজ মোটরে আসিয়া দু’তিন ঘণ্টা থাকেন-আবার চলিয়া যান। ডাক্তার বলিয়াছে, স্বাস্থ্যকর জায়গায় না লইয়া গেলে রোগ সারিবে না । দুপুব বেলাটা-কিন্তু একটু মেঘ করার দরুণ রৌদ্র নাই কোথাও । অপু লীলার বাসায় গিয়া দেখিলা লীলা জানালার ধারে বসিয়া আছে। সে সব সময় আসিতে পারে না, কাজলকে এক বাসায় রাখিয়া আসা চলে না। ভারী চঞ্চল, ও রীতিমত নির্বোধি ছেলে। তাহা ছাড়া রান্নাবান্না ও সমুদয় কাজ করিতে হয়। অপুর, কাজলকে দিয়া কুটাগাছটা ভাঙিবার সাহায্য নাই, সে খেলাধূলা লইয়া সারাদিন মহাব্যস্ত-অপু তাহাকে কিছু করিতে বলেও না, ভাবে-আহা, খেলুক একটু। পুওর মাদারলেস চাইল্ড ' ' লীলা মান হাসিয়া বলিল-এস । -এর কোথায় ? বিমলেন্দু কোথায় ? মা এখনও আসেন নি ? —বসে। বিমলেন্দু এই কোথায় গেল। নার্স তো নিচে, বোধ হয় খেয়ে একটু ঘুমুচ্ছে । --তারপর কোথায় যাওয়া ঠিক হ’ল-সেই ধরমপুরেই ? সঙ্গে যাবেন কে--মা আর বিমল । খানিকক্ষণ দুজনেই চুপ করিয়া রহিল। পরে লীলা তাহার দিকে ফিরিয়া বলিল-আচ্ছা অপূর্ব, বর্ধমানের কথা মনে হয় তোমাব ? অপু ভাবিল, কি হয়ে গিয়েচে লীলা । মুখে বলিল-মনে থাকবে না কেন-খুব মনে আছে। লীলা অন্যমনস্কভাবে বলিল—তোমরা সেই ওদিকের একটা ঘরে থাকতে —সেই আমি যৌতুম —তুমি আমাকে একটা ফাউণ্টেন পেন দিয়েছিলে মনে আছে লীলা ? তখন ফাউণ্টেন পেন নতুন উঠেচে —মনে নেই তোমার ? লীলা হাসিল । v0)