পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬৩

বলিল-আপু, এটা বোধ হয়। হীরে ! চুপ কর, চেঁচাসনে। পরে ভয়ে-ভয়ে আর একবার চারিদিকে চাহিয়া দেখিল । অপু দিদির দিকে অবাক হইয়া চাহিয়া রহিল। হীরক বস্তুটি তাহার অজ্ঞাত নয় বটে,-মায়ের মুখে, দিদির মুখে রূপকথার রাজপুত্র ও রাজকন্যার হীরামুক্তার অলঙ্কারের ঘটা সে অনেকবার শুনিয়াছে ; কিন্তু হীরা জিনিসটা কি রকম দেখিতে, সে সম্বন্ধে তাহার মনে একটু ভুল ধারণা ছিল। তাহার মনে হইত। হীরা দেখিতে মাছের ডিমের মত, হলদে হলদে, তবে নরম 可颈一*夺1··· সর্বজয়া বাড়ী ছিল না, পাড়া হইতে আসিয়া দেখিল-ছেলেমেয়ে বাড়ীর ভিতর দিকে দরজার কাছে দাড়াইয়া আছে। কাছে যাইতে দুৰ্গা চুপি চুপি বলিল-মা, একটা জিনিস কুড়িয়ে পেয়েচি আমরা। গডের পুকুরে পানফল তুলতে গিয়াছিলাম মা । সেখানে জঙ্গলের মধ্যে এইটে পোতা ছিল। অপু বলিল-আমি দেখে দিদিকে বল্লাম, মা । দুৰ্গা আঁচল হইতে জিনিসটা খুলিয়া মায়ের হাতে দিয়া বলিল-দ্যাখো দিকি কি এটা মা ? সর্বজয়াউণ্টাইয়া পাণ্টাইয়। দেখিতে লাগিল। দুৰ্গা চুপি চুপি বলিল—ম, এটা ঠিক হীরে-নয় ? সর্বজয়ার ও হীরক সম্বন্ধে ধারণা তাহাদের অপেক্ষা বেশী স্পষ্ট নহে। সে সন্দিগ্ধসুরে জিজ্ঞাসা করিল-তুই কি ক’রে জানালি হারে ? দুৰ্গা বলিলা-মজুমদারেরা বড়লোক ছিলো তো মা ? ওদের ভিটের জঙ্গলে কারা নাকি মোহর কুড়িয়ে পেয়েছিল-পিসি গল্প করতো। এটা একেবারে পুকুরের ধারে বনের মধ্যে পোতা ছিল, রোদার লেগে চক্‌চক্‌ করছিল,- এ ঠিক মা হীরে। সর্বজয়া বলিল-আগে উনি আসুন, ওঁকে দেখাই । দুৰ্গা বাহিরে উঠানে আসিয়া আহলাদের সহিত ভাইকে বলিল-হীরে যদি হয়, তবে দেখিস আমরা বড়মানুষ হয়ে যাবো । অপু না বুঝিয়া বোকার মত হি হি কারিয়া হাসিল। ছেলেমেয়ে চলিয়া গেলে জিনিসটা বাহির করিয়া সর্বজয়া ভাল করিয়া দেখিতে লাগিল। গোলমত, ধারকাটা ও পলতোলা, এক মুখ ছুচোলোযেন সিন্দুর কৌটার ঢাকৃনির উপরটা । বেশ চকচকে। সর্বজয়ার মনে হইল। যেন অনেক রকম রং সে ইহার মধ্যে দেখিতে পাইতেছে। তবে কাচ ষে নয়— ইহা ঠিক। এ রকম ধরণের কাচ সে কখনো দেখিয়াছে বলিয়া তো মনে হয় Se