পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুমি জানোই। নিজেদের বাগান ছিল না, ঘরে সব সময় চিনিও থাকত নাআমপোড়া-সরবৎ তখন একটা বিলাসিত । কালেভদ্রে হলে খুব ভালো লাগতো। আজ বানাও তো রাণুদি। খেয়ে দেখি, ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে কিনা। খোকাকেও একটু দিও-কঁচা আম আছে তো ? -সে তোকে ভাবতে হবে না। কাল এক ঝুড়ি আমি দিয়ে গিয়েছে তুলসীর মা। কাজল আসিয়া বলিল-বাবা, তোমার হয়েচে ? আমার এই বোতামটা লাগিয়ে দাও তো, আমি পারাচি নে অপু হাসিতে হাসিতে বলিল-দেখেচো কাণ্ড রাণুদি ? উলটাে ঘরে বোতাম লাগিয়ে বসে আছে। হ্যারে, তোর বুদ্ধিসুদ্ধি কবে হবে ? একটু পরে বারান্দায় বসিয়া সরবতে প্রথম চুমুক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছেলেবেলাটা ফিরিয়া আসিল । অপু চোখ বুজিয়া আমপোডার সোদা গন্ধ উপভোগ করিতেছিল। এই গন্ধটা কেমন পুরাতন দিনগুলোকে মনে পড়াইয়া দেয়। সেই দাওয়ায় চাটাই পাতিয়া বসিয়া তালের বড় খাওয়া, সেই মাটির দোয়াত হাতে প্রসন্ন গুরুমশায়ের কাছে পড়িতে যাওয়া । কত কথা মনে পড়ে। রাত্রে প্রদীপের আলোয় বসিয়া পড়িতে পড়িতে কানে আসিত মায়ের খুস্তি নাডিবার শব্দ। বিদেশ হইতে বাবা আসিলে অপুর অত্যন্ত আনন্দ হইত। রাত্রে বিছানায় শুইয়া অনেক রাত্রি পর্য্যন্ত শুনিত, বারান্দায় বসিয়া বাবা গান করিতেছে। আর একজনের কথা মনে পড়ে ! বাংলা দেশ হইতে বহুদূরে তারকাখচিত আকাশের নিচে সমুদ্রবেলায় শুইয়া থাকিতে থাকিতে হঠাৎ একসময় তাহার। তন্দ্রার ঘোরে। মনে হইয়াছে, সে আসিয়া দাড়াইয়াছে। সে বদলায় নাই । তাহার বয়স বাড়ে নাই । তাহার চোখের দৃষ্টির পরিবর্তন হয় নাই। তাহার আঁচলে বাধা নাটাফলগুলির সংখ্যা একটিও কমে নাই। সে অপুর সামনে দাড়াইয়া হাসিয়াছে। তন্দ্র ছুটয়া গেলে অপু অবাক হইয়া আকাশের দিকে চাহিত। সমস্ত দুঃখের দিনে উদার আকাশ তাহাকে শান্ত করিয়াছে। দেখিত, বাংলার আকাশের সহিত বিদেশের আকাশের কোন প্রভেদ নাই । দেখিত, তাহার দিদির দৃষ্টি যেন ক্রমশঃ আনীহারিকা-সৌরচরাচরে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িতেছে। এইমাত্র এইখানে ছিল-তাহার ঘুম ভাঙিতে দেখিয়া দূরে সরিয়া গিয়াছে। cवठ्ठांठ बांब न दांय ? R O