পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপু বলিল-কোন আপত্তি শুনছি নে, কবে লেখা আনবেন বলুন। ফাকি हिल फ़लएव ना । সরযু বলিল-বাবাও শুনেছেন আপনি এখানে থাকেন। উনি বলছিলেন একদিন আপনাকে দুপুরে খাবার কথা বলতে । না আপনারও কোন আপত্তি শোনা হবে না । কবে যাবেন বলুন-যেদিন যাবেন, সেইদিন হৈমন্তী আপনাকে লেখা শোনাবো । অপু বিশেষ আপত্তি করিল না। ববিবারে নিমন্ত্রণ রহিল। কাজলও সঙ্গে যাইবে । হৈমন্তী এবং সরযু দুইজনে কাজলকে অনেক আদর করিয়া বিদায় লাইল। ঠিকানাটা অপু রাখিয়া দিল। মেয়ে দুটি বিদায় লইলে অপু বিছানার কাছে আসিয়া বসিতে যাইবে, চাদবের উপর নজর পডিল কয়েকটা বেলফুল। তখনও বেশ তাজা, বেশীক্ষণ তোলা হয় নাই। অপু মনে মনে ভাবিল-এখানটায় হৈমন্তী বসেছিল। ও-ই নিয়ে এসেছিল। ফুলগুলো । ভুলে ফেলে গেছে, আচ্ছা মেয়ে যা হোক অপু ফুলগুলো তুলিয়া একবার গভীর ভ্রাণ লইল । রবিবারে ছেলেকে লইয়া অপু নিমন্ত্রণ রক্ষা করিতে গেল। নিজে একটু বিলাসিত করিতে ছাডে নাই, একটা শান্তিপুরী ধুতি পরিয়াছে। কিন্তু সে তুলনায় জামাটা ভাল হইল না-ময়লা মতো। অথচ এই ধুতিটা পরিয়া নিমন্ত্রণ খাইতে যাইবার তাহার বড় শখ। ফলে বিসদৃশ জামাকাপড পরিহিত অপু নিমন্ত্রণ খাইতে গেল। বাড়ীতে পা দিতেই হৈমন্তীর বাবা আসিয়া তাহাকে অভ্যর্থনা করিয়া বসাইলেন। ভদ্রলোক সরকারী কাজ করেন-বদলীর চাকরী । তিনি অপুর উপন্যাসটি পন্ডিয়াছেন। সম্প্রতি যে পত্রিকা দুইটিতে অপু উপন্যাস লিখিতেছে, সেগুলিও তেঁাহার বাড়ীতে রাখা হয়। অপু অবাক হইয়া দেখিল, বাড়ীময় সাহিত্যের আবহাওয়া । বাবা, ভাই বোন সবাই বেশ শিক্ষিত ও উদার। বসিবার ঘরে প্রচুর বই রহিয়াছে— অগোছালো ভাবে খাটের উপর ও টেবিলের উপর ছড়ানো । অপু নিজের অভিজ্ঞতা হইতে দেখিয়াছে, যে বাড়ীতে বই সাজানো থাকে, সে বাড়ী পাঠক কম। পড়ুয়াদের বই কখনো গোছানো থাকিতে পারে না। যাহারা শখের আসবাবের মতো বই দিয়া ঘর সাজাইয়া সুরুচির পরিচয় দিতে চায়--তাহাদের বই সাজানো থাকিতে পারে। হৈমন্তীদের পরিবার সম্বন্ধে অপুর বেশ একটা শ্রদ্ধা জন্মিল। তাহার মনে বন্ধমূল ধারণা আছে-যাহারা বই পড়িতে ভালবাসে VIS