পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সর্বাপেক্ষা খুশি হইয়াছে কাজল। এই কান্দন তাহাকে স্কুলে বহু১৬ হইতেছে না, পড়া মুখস্থ করিতে হইতেছে না। বাবা বলিয়াছে, গ্রামের কাছেই স্কুলে ভতি করিবে। তাহাতে যে দু-একদিন লাগিবে, তাহা বেশ মজায় । क्रांझि वॉशेिगांव । নিশ্চিন্দিপুরে ফিরিবার সময় অপু ছেলের কথা ভাবিয়াছিল। শেষে ভাবিল-কি আর হবে, গ্রামের স্কুলেই ভাত করিয়া দিই। বাদবাকি পড়া আমি নিজে দেখব’খন। আমি নিজেও তো একসময় গ্রাম্য স্কুলে পডেচি, আমাব কি পড়াশুনো কিছুই হয় নি ? প্রতিবেশীরা ফিরিয়া গিয়াছে। কাজল রাণীর সহিত তাহাদের বাড়ী গিয়াছে। দুপুরে অপু ঘরে ঢুকিয়া বলিল-প্রথম দিন। আর বেশী কিছু রান্না করতে হবে না। যা-হোক একটা হেঁচকি-টেচকি কিছু নামিয়ে ফেলো । এমনিতেই আসার কষ্ট গেছে।-রাণুদি ডাল আর তারকারী পাঠিয়ে দেবে বলেছে ? বলেছে, নতুন-বোঁ এল তাকে খাটালে গায়ের নিন্দে হবে যে। হৈমন্তী মুখ তুলিয়া নতুন ঘরকন্না করিবার আনন্দে হাসিল। সঙ্গে সঙ্গে অপুর মনে একটা আনন্দের রেশ ছডাইয়া পড়িল। সে সংসার করিতেছে স্ত্রীপুত্র লইয়া। সবাই খুশী। চারিদিক বেশ কেমন ভরিয়া উঠিয়াছে। সে হৈমন্তীকে জিজ্ঞাসা করিল-তুমি অনেক বড় বড় জায়গায় ঘুরেচে। বাবার সঙ্গে। এই অজ গাড়াগায়ে থাকতে পারবে তো ? -পারবো মশাই, পারবো । আমি সে রকম মেয়ে নই, তা হলে তোমাদে বিয়ে করতাম না । বরং শহরই আমার ভাল লাগে না । --বিকেলে তোমাকে নিয়ে নদীতে যাবো গা ধুতে ! এই পেছন দিয়েই পথ, বঁাশঝাড়ের ভেতর দিয়ে। দেখো, খুব ভাল লাগবে। --তুমি তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও, বেলা পড়ে এল যে, কাজল কই ? -সে রাণুন্দির এখানে খাবে। না, না, শুধু আমাকে নয়, তোমারটাও বাডো -এক সঙ্গে নিয়ে বসে যাই । --তুমি খেয়ে ওঠে তো আগে, তারপর আমি বসবো। বিকাল হইয়া আসিতেই অপু, হৈমন্তীকে লইয়া পুরানো ভিটার কাছে গেল। ---এই আমার পৈতৃক ভিটে হৈমন্তী। এখানে আমার জন্ম। ঐ যে আকন্দগাছ দেখছ-ওখানে একটা ঘর ছিল, সেই ঘরে। আমার বাবা-মাব পুণ্যস্মৃতি-মণ্ডিত মাটি এখানকার। হৈমন্তী ভিটার দিকে মুখ করিয়া গলায় আঁচল দিয়া মাটিতে উপুড় হইয়া প্রণাম করিল। বলিল-তাদের তো দেখলাম না। কপাল করে আসি নি। go