পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৮০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শানটিংএর শব্দ শুনিতে পাচ্ছি। পাশের বাড়ীর মুকুলবাবুর পোষা কুকুরটা ঘুমের মধ্যেই স্বপ্ন দেখে গরগর করে উঠছে। আমার কেন ভাল লাগছে না, জানি না। দাদু মারা যাবার পর থেকেই কেমন একটা চিন্তার পোকা মাথার ভেতরের সুন্থ কোষগুলি কুরে কুরে খেয়ে যাচ্ছে। বাবার মৃত্যুর পর আমার চিন্তাশক্তি বেশ কিছুদিন অবশ হয়েছিল, তা ছাড়া আমার বয়সও তখন ছিল কম। কিন্তু দাদুর মৃত্যু আমি খুব কাছ থেকে দেখলাম, মৃত্যুর কালো পোশাকপরা অতিলৌকিক শরীরটা একেবারে আমার গা দুয়ে গেল। সে চলে গেল বটে, কিন্তু তার ক্ষণিক উপস্থিতির नियांकन भूलूऊँ७ाजा अभि किकूडछे जूलाऊ श्राद्धछि न। পাশের ঘরের দরজা খোলা। ঐ ঘরে এই একমাস আগেও দাদু। শুয়ে থাকতেন । আলো পছন্দ করতেন না বিশ্রামের সময়, আলো নেভানো থাকতো। অন্ধকারে দাদুর সিগারেটের আগুন দেখতে পেতাম। গরমকালে দ্বাদু হাত-পা নাড়তে নাড়তে আপন মনে গাইতে-“ধীরসমীরে যমুনাতীরে বসতি বনে বনমালী।” মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এ কথা জানিবার জন্য সন্ন্যাসী হওয়ার দরকার হয় না। কিন্তু মৃত্যু এসে একদিন সব কেড়ে নিয়ে বিষাণ বাজাতে বাজাতে চলে যাবেএটা সহ্য করতে হলে দৃঢ় মন দরকার। আমি বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছি, আমার সে শক্তি নেই। মৃত্যু এসে অলক্ষ্যে আমার ঘরে দাড়াবে, তর্জনী তুলে ইন্দিত করে কঠিন আদেশ উচ্চারণ করবে-এসে ; আমাকে চলে যেতে হবে। আমি পৃথিবীকে ভালবাসি, জীবনকে শীতের রোন্দরের মত ভালবাসি। বৃষ্টির দিনে জানলায় বসে ক্রমঘনায়মান অন্ধকারে অবিশ্রাম বৃষ্টি দেখতে দেখতে হঠাৎ আমার মনে হয়, মাটির পৃথিবী ছয় ঋতু সুর্যোদয়-সূর্য্যন্ত বর্ষণক্ষান্ত আকাশের ময়ুরকষ্ঠী রঙ-এসব ছেড়ে কখনো আমি যেতে পারবো না। কবিতা লিখি না-কিন্তু আমি কবি, আমি রসিক । মাটির সঙ্গে ষে নাড়ীর বন্ধন, তাকে ছিড়ে যেতে আমি পারবো না । অথচ সে আমার কথা শুনবে না, সে আমায় ছেড়ে যাবে না, প্রতিজ্ঞা শুনে নি:শব্দ অট্টহাস্য করে দিকচিহ্নহীন অন্ধকারে আমাকে চিরকালের জন্য ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। বেঁচে থাকার তবে অর্থ কি ? সমস্ত পৃথিবীটার সৃষ্টি না হলেও ক্ষতি ছিল না। আমি তো চিরদিনের জন্য তাকে নিজের কাছে রাখতে পারবে না, তবে সামান্য সময়ের জন্য ধরে রাখার কি অর্থ ? অথচ ঘুমের ঘোরে মাঝে মাঝে মনে হয়, জীবনের কি-যেন গৃঢ় অর্থ আছে । জীবনের সার্থকতা কোথায়, ”কে যেন আমাকে কানে কানো বলে। SoU