পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাবা কি করেছে তোমার, কেন তুমি বাবার নামে যখন তখন যা তা বলবে ? তাহার কথা শেষ হইতে না হইতে গোকুল হাতের বঁাশ নামাইয়া রাখিয়া দা হাতে এক লাফে রোয়াকের সিডি বাহিয়া উঠিয়া কহিল—তবে রে । আজ তোমার একদিন কি আমার একদিন-তোমার বাপের বাড়ীর আবদার না। ঘুচিয়ে আমি আজ-- একটা খুনো খুনি ব্যাপার বুঝি বা হয় দেখিয়া বাড়ীর কৃষাণ উঠান হইতে ডাকিয়া কহিল—কি করেন। দ-ঠাকুর-কি করেন, থামুন থামুন-পরে সে বোয়াকে উঠিল-দুর্গাঁও ছুটিয়া আসিল-সখী ঠাকুরুণও রোয়াক হইতে দালানেব মধ্যে ঢুকিলোিন-খুব একটা হৈ চৈ হইল। দালানের মধ্যে গোকুলের স্ত্রী স্বামীব উদ্যত আক্রমণের সম্মুখে পিছাইয়া গিয়া মাব ঠেকাইবার জন্য দুই হাত তুলিয়া দেওয়ালেব গায়ে প্রাণপণে ঠেস দিয়া জডসড হইয়া দাডাইয়াছে, চোখে তাহার ভয়ের দৃষ্টি-কৃষাণ গিয়াই গোকুলেব হাত হইতে দা-খানা কাডিয়া লইল , পরে তাহাকে ধরিয়া দালানের বাহিরে আনিতে আনিতে বলিতে লাগিল—কি কবেন, দ-ঠাকুব, থামুন-আঃ-আসুন নেমে গোকুলেব বয়স পয়ত্রিশ ছত্রিশের কম নয়, কিন্তু দেহ তেমন সবল নহে, বলিষ্ঠ কৃষাণেব সহিত ম্যালেরিযা-দুর্বল দেহ লইয়া হাত ছাড়াছাডির চেষ্টা কবিতে গেলে দুর্বলতাটাই অধিকতর প্রকাশ হইয়া পড়িবে বুঝিয়া বলিতে বলিতে নামিল-দ্যাখো না-একটা ডোল ধান, বীজ ধান, জল পেয়ে যদি কালয়ে যায়, ও কি আর বোয়া হবে ? আজি তিনদিন ধরে বলচি-আবার তেজডা দেখলে তো ? তোমার তেজ আমি - দুৰ্গা নিঃশ্বাস ফেলিয়া বাচিল, কিন্তু এ সময় খুড়ীমাব সঙ্গে আলাপ-পরিচয় কথাবার্তার সময় নহে বুঝিয়া সে একপ্রকার নিঃশব্দেই অন্নদা রায়ের বাড়ীর বাহির হইয়া পডিল । পাচু বাড়িয্যেব বাড়ীর কাছে জামতলায় একজন লোক ঘটী-বাটি সারাইতে বসিয়াছে। কাঠের কয়লাব হাপিবে গনগনে আগুন পাডার লোকের অনেক ঘটীবাটী জড করা । বেঁটে ধরণের লোকটা, পাকসিটে গডনের চেহারা, বয়স কত বুঝিবার উপায় নাই, ত্রিশও হইতে পারে, পঞ্চাশও হইতে পারে; গলায় ত্রিকষ্ঠ তুলসীর মালা, মুখের ডান দিকে একটা কাটা দাগ-চাতের কজিতে দড়ির মত শির বাহির হইয়া আছে ; পরণে আধ্যময়লা ধুতি। পাড়ার অনেক ছেলেমেয়ে তাহাকে ঘিরিয়া ঘটী-বাটি সারানো দেখিতেছে। দুৰ্গাও গেল। লোকটা বলিল-কি চাই খুকী ? সে বলিল-কিছু না দেখবো