পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেশ বড় চাষী ও অবস্থাপন্ন গৃহস্থ। বাহিরের বড় আটচালা ঘরে মহা আদরে তাহারা থাকিবার স্থান করিয়া দিল । লক্ষ্মণ মহাজনের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সকালে স্নান করিবার জন্য পুকুরের ঘাটে আসিয়াছিল-জলে নামিতে গিয়া পুকুরের পাড়ে' নজর পড়াতে সে দেখিল পুকুর পাড়ের কলাবাগানে একটি অচেনা ছোট ছেলে একখানি কঞ্চি হাতে কলাবাগানের একবার। এদিক একবার ওদিক পায়চারি করিতেছে ও পাগলের মত আপন মনে বকিতেছে। সে ঘাড় নামাইয়া কাছে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল --তুমি কাদের বাড়ী এসেছ, খোকা ? অপুর যত জারিজুরি তাহার মায়ের কাছে। বাহিরে সে বেজায় মুখচোরা । প্রথমটা অপুর মাথায় আসিল যে টানিয়া দৌড় দেয়। পরে সঙ্কুচিত সুরে बलिल-७झे अद्धि बाज़़ी বাধুটি বলিল-বঢ়ঠাকুরদের বাড়ী ? বঢ়ঠাকুরের গুরুমশায়ের ছেলে ? ও ! বধু সঙ্গে করিয়া তাহাকে নিজের বাড়ীতে লইয়া গেল। তাহদের বাড়ী পৃথক-লক্ষ্মণ মহাজনের বাড়ী হইতে সামান্য দূরে, কিন্তু মধ্যে পুকুরটা পড়ে। বধুর ব্যবহারে অপুর লাজুকতা কাটিয়া গেল। সে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া ঘরের জিনিসপত্র কৌতুহলের সহিত চাহিয়া চাহিয়া দেখিতে লাগিল। ওঃ, কত কি জিনিস • • •তাহদের বাড়ীতে এ রকম জিনিস নাই। এরা খুব বড়লোক তো ! কড়ির আলনা, রং-বেরং এর ঝুলন্ত শিকা, পশমের পাখী, কঁাচের পুতুল, মাটির পুতুল, শোলার গাছ-আরও কত কি।-দু একটা জিনিস সে ভয়ে ভয়ে হাত তুলিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া দেখিল। বধু এতক্ষণ ভাল করিয়া ছেলেটির মুখের দিকে চাহিয়া দেখে নাই-কাছের গোড়ায় দেখিয়া মনে হইল যে, এখনও ভারি ছেলেমানুষ, মুখের ভাব যেন পাচ বছরের ছেলের মত কচি ৷ এমন সুন্দর সুবোধ চোখের ভাব সে আর কোন ছেলের চোখে এ পর্যন্ত দেখে নাই-এমন রং, এমন গড়ন, এমন সুন্দর মুখ, এমন তুলি দিয়া আঁকা ডাগর নিষ্পাপ চােখ-অচেনা ছেলেটির উপর বধূর বড় মমতা হইল । অপু বসিয়া নানা গল্প করিল-বিশেষ করিয়া কল্যকার রেলপথের কথাটি । খানিকটা পরে বধু মোহনভোগ তৈয়ারী করিয়া খাইতে দিল। একটা বাটিতে অনেকখানি মোহনভোগ, এত ঘি দেওয়া যে আঙলে ঘিয়ে মাখামাখি হইয়া যায়। অপু একটুখানি মুখে তুলিয়া খাইয়া অবাক হইয়া গেল-এমন অপূর্ব জিনিস আর সে কখনো খায় নাই তো b-মোহনভোগে কিসমিস দেওয়া